Health Department

নার্সিংহোমের ঠিকুজিকুলুজির খোঁজ জেলায়

নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং স্বাস্থ্যজেলার অধিকর্তাদের অবিলম্বে তাঁদের এলাকার যাবতীয় বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রের তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২২ ০৮:১৬
Share:

সরকারের বক্তব্য, ফি-বছরই রুটিন মেনে হিসাব নেওয়া হয়ে থাকে। প্রতীকী ছবি।

অদূরে পঞ্চায়েত ভোট। তারই মধ্যে কোন জেলার কোথায় ক’টি কত বড় বা ছোট আয়তনের বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র, নার্সিংহোম, ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে, তার সবিস্তার তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। ভোট সামনে বলেই বিরোধী শিবির এই হিসাব নেওয়ার সরকারি উদ্দেশ্য সম্পর্কে এমন জল্পনায় মেতেছে যে, এটা আসলে মফস্বলের বেসরকারি নার্সিংহোম, চিকিৎসা পরিষেবা কেন্দ্রগুলিকেও স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় এনে গ্রামীণ ভোট টানার ফিকির। তবে সরকারের বক্তব্য, ফি-বছরই রুটিন মেনে এই হিসাব নেওয়া হয়ে থাকে।

Advertisement

নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং স্বাস্থ্যজেলার অধিকর্তাদের অবিলম্বে তাঁদের এলাকার যাবতীয় বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রের তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেমন-তেমন হিসাব নয়, জেলার আনাচেকানাচে ছড়িয়ে থাকা সব নার্সিংহোম ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নাড়িনক্ষত্রের রিপোর্ট চেয়ে স্বাস্থ্য ভবন মারফত একটি নির্দেশিকায় পাঠানো হয়েছে জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে।

২০১১ থেকে ২০২২, অর্থাৎ রাজ্যে পালাবদল-পরবর্তী প্রায় এক যুগে তৃণমূল সরকারের আমলে বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্রের সংখ্যা প্রতি বছর কী ভাবে বেড়েছে, জানতে চাওয়া হয়েছে নির্দেশিকায়। জানতে চাওয়া হয়েছে, জেলায় এই ধরনের নার্সিংহোমের ক’টিতে ৫০০ বা তার বেশি শয্যা আছে, ৫০ বা তার কম শয্যার নার্সিংহোমের সংখ্যাই বা কত। ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলির মধ্যে ক’টিতে এক্স-রে, ইউএসজি, সিটি স্ক্যান বা এমআরআই-এর মতো পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে, তথ্য চাওয়া হয়েছে তারও। প্রায় এক যুগের শাসন পর্বে বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত এমন অনুপুঙ্খ হিসাব নেওয়ার বহর দেখে কৌতূহল ছড়িয়েছে নবান্নের অলিন্দেও। অল বেঙ্গল প্যারামেডিক্স অ্যান্ড মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনোজ চক্রবর্তী এই সরকারি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন। বলছেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখে গ্রামীণ এলাকার নার্সিংহোমগুলিকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আওতায় আনার জন্যই এই সরকারি উদ্যোগ।’’ বিরোধী শিবিরের অবশ্য কটাক্ষ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের নামে সরকার আসলে গ্রামীণ মানুষের ভোট পেতে ‘পথ্য’ জোগাড় করছে! পঞ্চায়েত এলাকার নার্সিংহোমগুলিকে স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় এনে গ্রামীণ মানুষের মন পেতে চাইছে সরকার।

Advertisement

তবে স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, এই তথ্য সংগ্রহ একটা রুটিন-কাজ। প্রতি বছরই এই হিসাব চাওয়া হয়। এক বছরে জেলার আনাচেকানাচে থাকা বিভিন্ন বেসরকারি নার্সিংহোম বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার কলেবরে কতটা বাড়ল, তাদের পরিকাঠামোর কী বদল হল, নতুন সংস্থাই বা ক’টি, মূলত সেই হিসাবের ‘আপডেট’ বা হালতামামি চায় সরকার। এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, “ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট আইন অনুযায়ী এই ধরনের নার্সিংহোম, ডায়াগনস্টিক সেন্টার সরকারের খাতায় নথিভুক্ত। ফলে তাদের নথি সরকারের ঘরে থাকেই। পরিকাঠামো কম, এই যুক্তি দেখিয়ে বহু ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড সংক্রান্ত পরিষেবা এড়িয়ে যায় অনেকেই। তাই স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সংক্রান্ত তথ্য সম্পর্কে সরকার অবহিত থাকতে চায়।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement