উল্লেখ্য, সোমবার তাঁর শপথের প্রস্তুতি নেবে বিধানসভার সচিবালয়। তবে মঙ্গল ও বুধবার ইদের জন্য ছুটি রয়েছে বিধানসভায়। তাই বৃহস্পতিবারের আগে বাবুলের শপথগ্রহণ সম্ভব ছিল না। কিন্তু নতুন করে জটিলতা দেখা দেওয়ায় বালিগঞ্জের বিধায়ক পদে শপথগ্রহণ কবে হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বজায় রইল।
বাবুলকে শপথগ্রহণ করাতে পারবেন না, জানিয়ে দিলেন ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
বাবুল সুপ্রিয়কে শপথগ্রহণ করানোর চিঠি পেলেই তা সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করবেন ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার আনন্দবাজার অনলাইনকে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। শনিবার সন্ধ্যায় টুইট করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বাবুলের শপথের অনুমতি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। তিনি লেখেন, ‘ভারতের সংবিধানের ১৮৮ অনুচ্ছেদে উল্লিখিত আমার উপর থাকা ক্ষমতার ভিত্তিতে, ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার তরফে ১৬১ বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত শ্রী বাবুল সুপ্রিয়কে শপথগ্রহণ করানোর দায়িত্ব দিলাম’। ১৬ এপ্রিল বালিগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে জয় পেলেও, গত প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে শপথ নিতে পারেননি বাবুল। তাই রাজ্যপালের এমন ঘোষণার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন তিনি।
এর পর বাবুল টুইট করে ধন্যবাদ জানান ধনখড়কে। তবে স্পিকারের কাছে শপথ নিতে না পারার জন্য ‘দুঃখ’ পেয়েছেন বলেও লিখেছিলেন বাবুল। কিন্তু রাজ্যপালের এমন সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ বলে জানিয়ে দেন ডেপুটি স্পিকার। আর তাঁর এমন সিদ্ধান্তের পরেই বাবুলের শপথগ্রহণ নিয়ে ফের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কারণ নিজের অবস্থানে অনড় থেকে ডেপুটি স্পিকার আশিস বলেছেন, ‘‘আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা আমি পালন করতে পারব না। কারণ রাজ্যপাল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা কার্যকর হলে, তাতে বিধানসভার স্পিকারের অপমান হবে। তাই আমার কাছে বাবুল সুপ্রিয়র শপথগ্রহণ করানোর চিঠি এলেই সবিনয়ে তা প্রত্যাখ্যান করব।’’
উল্লেখ্য, সোমবার তাঁর শপথের প্রস্তুতি নেবে বিধানসভার সচিবালয়। তবে মঙ্গল ও বুধবার ইদের জন্য ছুটি রয়েছে বিধানসভায়। তাই বৃহস্পতিবারের আগে বাবুলের শপথগ্রহণ সম্ভব ছিল না। কিন্তু নতুন করে জটিলতা দেখা দেওয়ায় বালিগঞ্জের বিধায়ক পদে শপথগ্রহণ কবে হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বজায় রইল।
সাধারণ ভাবে বিধায়কদের শপথগ্রহণ করানোর যে ক্ষমতা রাজ্যপালরা বিধানসভার স্পিকারদের দিয়ে রাখেন, পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান রাজ্যপাল তা নিজের কাছে ফিরিয়ে নিয়েছেন। তাই নির্বাচনে জয়ী প্রার্থীকে শপথগ্রহণের অনুমতি রাজ্যপালের কাছ থেকেই নিতে হচ্ছে। এমনকি রাজ্যপাল চাইলে বিধায়ককে নিজেই শপথগ্রহণ করাতে পারেন বা রাজ্যপালের মনোনীত কোনও ব্যক্তি শপথগ্রহণ করাতে পারেন। গত বছর ভবানীপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে জয়ের পর ৭ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শপথগ্রহণ করাতে বিধানসভায় এসেছিলেন রাজ্যপাল। সেই কারণে বাবুলের শপথগ্রহণের অনুমতির জন্য রাজভবনে চিঠি পাঠায় পরিষদীয় দফতর। ঠিক হয়, সেই অনুমতি পেলে পরিষদীয় দফতর তা বিধানসভার সচিবালয়কে জানাবে। সেই মতো শপথের আয়োজন করবে বিধানসভার সচিবালয়। কিন্তু, রাজ্যপালের চেয়ে পাঠানো রাজ্যের বেশ কিছু বিল ও প্রস্তাবের আলোচনার বিস্তারিত বিবরণ না পাওয়া পর্যন্ত তিনি শপথগ্রহণের অনুমতি দিতে রাজি হচ্ছিলেন না বলে জানা যাচ্ছিল। কিন্তু শনিবার অচমকাই শপথের অনুমতি দেন রাজ্যপাল। এবং শপথগ্রহণের জন্য তিনি দায়িত্ব দেন ডেপুটি স্পিকারকে। কিন্তু সেই ডেপুটি স্পিকারই দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে সরে দাঁড়িয়েছেন।
প্রসঙ্গত, রাজভবনের সঙ্গে বিধানসভার সঙ্ঘাত এখন আর কোনও নতুন ঘটনা নয়। নানা বিষয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সঙ্ঘাত হয়েছে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই সঙ্ঘাতের জেরে ঝুলে রয়েছে বাবুলের বিধায়ক পদে শপথের বিষয়টি।