Calcutta High Court

সাগরস্নান, না ঘটে ঘটে জল? শুনানি আজও

বিকল্প পথ সন্ধানের পরামর্শ দিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের প্রস্তাব, প্রয়োজনে ছোট ছোট পাত্রে গঙ্গাসাগরের জল দেওয়া যেতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৩১
Share:

ফাইল চিত্র।

করোনা পরিস্থিতিতে দুর্গাপুজোর ভিড় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক রায় দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তাদের পর্যবেক্ষণ, প্রচুর মানুষ একসঙ্গে জলে নেমে স্নান করলে ড্রপলেটের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাই সংক্রমণ ঠেকানোর ক্ষেত্রে রাজ্যের ব্যবস্থাপনা যদি সন্তোষজনক না-হয়, তা হলে এ বার গঙ্গাসাগর মেলা পুরোপুরি বন্ধের নির্দেশও দেওয়া হতে পারে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে হাইকোর্ট।

Advertisement

তবে এ দিনের শুনানিতে চলতি বছরের সাগরমেলার ভবিতব্য চূড়ান্ত হয়নি। প্রথাগত পুণ্যস্নানের বদলে বিকল্প কোনও পথ বার করা যায় কি না, রাজ্য সরকারকে তা-ও ভেবে দেখতে বলেছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিবিএন রাধাকৃষ্ণন এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। আজ, শুক্রবার ফের শুনানি হবে। তার আগে আরও একটি হলফনামা পেশ করতে হবে রাজ্যকে। বিকল্প পথ সন্ধানের পরামর্শ দিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের প্রস্তাব, প্রয়োজনে ছোট ছোট পাত্রে গঙ্গাসাগরের জল দেওয়া যেতে পারে। মানুষ তা সংগ্রহ করে মাথায় ছেটাতে পারেন।

রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত এ দিন আদালতে জানান, সরকার বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ তাতে সন্তুষ্ট হয়নি। তারা নির্দেশ দিয়েছে, কোভিড সংক্রমণ ঠেকাতে কী কী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে এবং সেগুলো পর্যাপ্ত কি না, রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের কোনও শীর্ষ চিকিৎসককে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। আজ সেই হলফনামা পেশের পরে ফের শুনানি হবে বেলা ২টোয়।

Advertisement

এ দিন সকালে মামলার প্রথম দফার শুনানি হয়। পুলিশি ব্যবস্থার বদলে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে কতটা কী বন্দোবস্ত হয়েছে, সেই প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি। প্রথম বার শুনানির পরে বিষয়টি মুলতুবি হয়ে যায়। বেলা ২টোর পরে দ্বিতীয় দফার শুনানি শুরু হয়। বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় তখন এজির উদ্দেশে বলেন, “এই মামলা কোনও বিরূপ মনোভাবের নয়। এটা জনস্বাস্থ্যের বিষয়। সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য সকলকে একত্রে বসতে হবে। আপনারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং আধিকারিকেরা একসঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করুন। মুখ্যসচিবকেও বৈঠকে থাকতে বলতে পারেন। আলোচনা করে আমাদের জানান।”

ছটপুজোর প্রসঙ্গ টেনে গঙ্গাসাগর মেলার অনুমতি দেওয়ার পক্ষে এ দিন সওয়াল করেন এজি। কিন্তু উচ্চ আদালত তা মানতে চায়নি। প্রধান বিচারপতি বলেন, “ছটপুজোর বিষয়টি সাগরমেলার সঙ্গে মেলে না। এর সঙ্গে একমাত্র কুম্ভমেলারই তুলনা হতে পারে। বেঁচে থাকার অধিকার মানুষের সব থেকে বড় মৌলিক অধিকার। সেটা মাথায় রাখতে হবে।”

এই জনস্বার্থ মামলাটি করেছেন অজয়কুমার দে নামে এক ব্যক্তি। দুর্গাপুজো, কালীপুজো, ছটপুজো নিয়ে তিনিই মামলা করেছিলেন।

তাঁর আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় এ দিন আদালতে জানান, গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে একটি বিশেষ আইন আছে রাজ্য সরকারের হাতে। ১৯৭৬ সালের সেই আইন অনুযায়ী, নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্য রক্ষা করার জন্য সাগরদ্বীপে মানুষের আগমন নিষিদ্ধ করা যায়। সেই ক্ষমতাবলে এ বার মেলায় পুণ্যার্থী আগমন বন্ধ করা যেতে পারে। কেরলের সবরিমালা মেলার ক্ষেত্রে সেই রাজ্যের সরকারের একটি বিজ্ঞপ্তিও আদালতে জমা দেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement