অতিমারিতে রেলে হকারদের হকারি করতে কোনও বাধা নেই —প্রতীকী চিত্র।
লোকাল ট্রেন এখনও চালু হয়নি। তবে অতিমারিতে রেলে হকারদের হকারি করতে কোনও বাধা নেই। কিন্তু করোনা বিধি মেনেই তাঁদের হকারি করতে হবে বলে রবিবার জানিয়ে দিয়েছেন রেলের আধিকারিকেরা।
করোনা আবহে রেলের হকারেরা করোনা বিধি মানছেন না বলে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি সামাজিক মাধ্যমে অভিযোগ ওঠে। তাই চলন্ত ট্রেনে ও প্ল্যাটফর্মে নাকি হকারি নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। এই জল্পনা শুনে অনেকেরই প্রশ্ন, তা হলে কি করোনা আবহে ট্রেনে হকারি নিষিদ্ধ হয়ে গেল?
‘‘চলন্ত ট্রেনে হকারি বন্ধের বিষয়ে কোনও নির্দেশ জারি করা হয়নি। তবে করোনা পরিস্থিতিতে হকারদের যাবতীয় সতর্কতা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হকারি করতে বলা হয়েছে,’’ বলেন পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী।
হাওড়া ডিভিশনের কিছু যাত্রী কয়েক দিন আগে রেলের আধিকারিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ট্রেনে যে-সব হকার উঠছেন, তাঁরা মাস্ক পরছেন না। করোনাকালের অন্যান্য সতর্কতা বিধিও মানছেন না। তার পরেই রেল নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী আরপিএফের তরফে হকারদের সচেতন করতে ট্রেনে ট্রেনে অভিযান চালানো হয়। নানা ধরনের সচেতনতা কর্মসূচিও নেওয়া হয়।
রেলের আধিকারিকেরা জানান, রেলে হকারি নিষিদ্ধ না-হলেও অবৈধ হকার ধরার জন্য রেল যে-অভিযান চালাচ্ছে, তা যথারীতি চলবে। সেই সঙ্গেই মাঝেমধ্যে আচমকা বিভিন্ন ট্রেনে উঠে দেখা হবে, হকারেরা মাস্ক পরে হকারি করছেন কি না। কিছু ক্ষণ অন্তর হাত স্যানিটাইজ় বা জীবাণুমুক্ত করা এবং অন্যান্য করোনা বিধি তাঁরা মানছেন কি না, দেখা হবে তা-ও।
রাজ্য সরকার এখনও লোকাল ট্রেন চালু না-করলেও ‘স্টাফ স্পেশাল’ বা কর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট বিশেষ ট্রেনের সংখ্যা বেড়েছে। ট্রেন বাড়ায় স্বভাবতই বেড়েছে হকারের সংখ্যাও। যদিও আগের মতো লোকাল ট্রেন চালু না-হওয়ায় সব হকার ট্রেনে ফিরে আসেননি। যাঁরা ফিরেছেন, তাঁরা জানাচ্ছেন, কিছু ট্রেন চালু হলেও তাতে আগের মতো ভিড় হচ্ছে না। ফলে ট্রেনে বিক্রিবাটা আগের ছন্দে ফেরেনি। তবু তাঁরা ট্রেনের হকারিতেই ফিরে আসতে চান।
হাওড়া ডিভিশনে গত ৩০ বছর ধরে হকারি করছেন, এমন এক হকার বলেন, ‘‘আগের মতো ট্রেনের সংখ্যা বাড়েনি, ভিড়ও হয় না। তবু ট্রেনে ফিরে এসেছি। কারণ, ৩০ বছর ধরে ট্রেনই আমার রুজিরুটির জায়গা। আমরা করোনার সতর্কতা বিধি মেনেই হকারি করছি। আমাদেরও তো করোনা-আতঙ্ক রয়েছে। বাড়িতে পরিবার রয়েছে। তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই আমাদের করোনা বিধি মেনে হকারি করতে হবে।’’