Metro

আগে থেকে সময় ‘বুক’ করে চড়তে হবে মেট্রোয়

ওই সময়ে বুকিং পাওয়া যাত্রীর সংখ্যা কত, তার উপরেই নির্ভর করবে বিষয়টি। অনুমোদনযোগ্য সংখ্যা পেরিয়ে গেলে ওই সময়ের জন্য আর বুকিং মিলবে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৪২
Share:

ফাইল চিত্র।

পরিষেবা ফের চালু হলে এ বার সম্ভবত স্মার্ট কার্ড পাঞ্চ করেই সরাসরি মেট্রো স্টেশনে ঢোকা যাবে না। বিমানবন্দরের মতো কোনও অ্যাপ বা নির্দিষ্ট লিঙ্কের মাধ্যমে যাত্রার সময় আগাম জানিয়ে পাস বুক করতে হবে। বুকিং অবশ্য চাইলেই মিলবে না।

Advertisement

ওই সময়ে বুকিং পাওয়া যাত্রীর সংখ্যা কত, তার উপরেই নির্ভর করবে বিষয়টি। অনুমোদনযোগ্য সংখ্যা পেরিয়ে গেলে ওই সময়ের জন্য আর বুকিং মিলবে না। সে ক্ষেত্রে অন্য সময় বেছে নিতে পরামর্শ দেবে যন্ত্র। প্রবেশপথে পাস দেখিয়ে তবেই ঢোকা যাবে মেট্রো স্টেশনে। বৃহস্পতিবার নবান্নে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে মেট্রো কর্তৃপক্ষের বৈঠকে এমনই প্রস্তাব উঠেছে।

এ দিনের আলোচনায় ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সমাধানসূত্রে পৌঁছনো যায়নি। তাই আজ, শুক্রবার মেট্রো ভবনে ফের দু’পক্ষের বৈঠক হবে। তবে শেষমেশ বোর্ডিং পাসই মুশকিল-আসান হতে পারে। ভিড় কমাতে শুধুমাত্র স্মার্ট কার্ড থাকা যাত্রীদেরই যে মেট্রোয় উঠতে দেওয়া হবে, সেই ঘোষণা আগেই হয়েছিল। এ দিন নবান্নের বৈঠকে ভিড় নিয়ন্ত্রণের আলোচনায় জানানো হয়, স্মার্ট কার্ডের যাত্রীর সংখ্যাও কম নয়। আগে স্বাভাবিক দিনে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ যাত্রী স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করতেন। লকডাউন শুরুর আগে গত ২০ মার্চও সংখ্যাটা ছিল ২.১৯ লক্ষ।

Advertisement

কী ভাবে মিলতে পারে মেট্রোর পাস

• নির্দিষ্ট লিঙ্কে ক্লিক করে জানাতে হবে নাম, পরিচয়, স্মার্ট কার্ড নম্বর।

• এর পরে জানাতে হবে কোন স্টেশন থেকে কোন স্টেশনে যেতে চান।

• যাত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হবে তাঁর পছন্দের সময়।

• অ্যাপ/সিস্টেম জানিয়ে দেবে ওই সময়ে কত জনের বুকিং রয়েছে। সেই সংখ্যা নির্ধারিত সীমার মধ্যে থাকলেই পাস দেওয়া হবে।

• ভিড় বেশি থাকলে তাঁকে অন্য সময় বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হবে।

• সফরের সময় বাছতে হবে অনেক আগে। সম্ভব হলে আগের দিন।

আবার গত ৩ ফেব্রুয়ারি স্মার্ট কার্ডের যাত্রী ছিলেন ৩.৫৯ লক্ষ। তাই শুধু স্মার্ট কার্ড চালু রাখলেও ভিড় যে হতে পারে, তা নিয়ে মেট্রো ও রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা সহমত হন। মেট্রোকর্তারা ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাজ্যের কাছে বাড়তি পুলিশবাহিনী চান। কিন্তু প্রশাসনের কর্তারা জানান, কোনও যাত্রীর কাছে বৈধ স্মার্ট কার্ড থাকলে তাঁকে আটকানো পুলিশের পক্ষে সম্ভব নয়। আলোচনার এই পর্যায়েই ডিজিটাল উপায়ে ভিড় নিয়ন্ত্রণের কথা উঠে আসে।

আরও পড়ুন: ভিড় এড়াতে পাতালেও বিমানবন্দরের ধাঁচে ই-বোর্ডিং পাস!

সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, দূরত্ব-বিধি মেনে ট্রেন চালানো হলে একটি আট কামরার ট্রেনে সর্বাধিক ২০০ জন যাত্রী বসে যেতে পারবেন। কিছু যাত্রীকে দাঁড়িয়ে যাওয়ার অনুমতি দিলেও ট্রেন-পিছু ওই সংখ্যাটা ৪৫০-৫০০ মতো হয়। ফলে দিনে ৯০-১০০টি ট্রেন চালানো হলে কোনও অবস্থাতেই ৪৫-৫০ হাজারের বেশি যাত্রী পরিবহণ করা সম্ভব নয়। তার বেশি যাত্রী উঠলে দূরত্ব-বিধি মেনে চলা কঠিন হবে। এই অবস্থায় কী ভাবে যাত্রী-সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, তার উপায় খুঁজতে গিয়েই ই-বোর্ডিং পাসের কথা ওঠে। এর জন্য অ্যাপ এবং প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরির ক্ষেত্রে রাজ্য প্রশাসন ও পরিবহণ দফতর মেট্রোকে সাহায্য করবে বলে খবর। ‘পথ দিশা’ অ্যাপের মাধ্যমে ওই লিঙ্ক যাত্রীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় কি না, তা-ও ভাবা হচ্ছে।

প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের উপস্থিতিতে অ্যাপ তৈরির একটি সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আজ মেট্রো ভবনে বৈঠক হতে পারে। মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘দূরত্ব-বিধি মেনে কী ভাবে পরিষেবা শুরু করা যায়, তা ঠিক করতে শুক্রবার ফের বৈঠক করবেন মেট্রো এবং রাজ্যের আধিকারিকেরা। সমস্যা মিটিয়ে পরিষেবা শুরু করতে আশাবাদী।’’ কী ভাবে কাজ করবে পাস ব্যবস্থা? নবান্ন সূত্রের খবর, স্মার্টফোনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট লিঙ্কে ক্লিক করলে যাত্রীদের পরপর কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।

তার মধ্যে যাত্রীর নাম, কোন সময়ে কোন স্টেশন থেকে কোন স্টেশনে তিনি যেতে চান, তা জানতে চাওয়া হবে। ওই সময়ে যাত্রী-সংখ্যা নির্ধারিত সীমার নীচে থাকলে ওই যাত্রীকে দু’ঘণ্টার জন্য পাস দেওয়া হতে পারে। ওই পাস আসলে একটি কিউ আর কোড। যা দেখে স্টেশনে ঢোকার ছাড়পত্র দেবেন মেট্রোর রক্ষীরা। পাসের সময় না মিললে যাত্রীকে মেট্রো স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হবে না। তবে পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ওই নিয়মে কিছুটা ছাড় দেওয়া হতে পারে বলে খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement