হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। —ফাইল চিত্র।
ধীরে ধীরে দার্জিলিং লোকসভা আসনে নিজের উপস্থিতি বাড়াচ্ছেন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে শিলিগুড়িতে থেকে পাহাড়-সমতলে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে কাজ শুরু করেছেন প্রাক্তন বিদেশসচিব। শুক্রবার তিনি ঘোষণা করেন, ২২ জানুয়ারি রামমন্দির উদ্বোধনের দিন তিনি শিলিগুড়ির প্যাটেল রোডের বাড়িতে থেকে পূজা-অর্চনা করবেন। সেখানে সাধারণ মানুষ থেকে স্থানীয় বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, অনেককেই আমন্ত্রণও জানিয়েছেন তিনি।
প্রাক্তন বিদেশসচিব শ্রিংলার এই সব অনুষ্ঠান নতুন করে এই লোকসভা আসনে বিজেপির প্রার্থী সংক্রান্ত বিতর্কটি উস্কে দিচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, নরেন্দ্র মোদী থেকে জয়শঙ্কর, নেতৃত্বের অনেকের পছন্দের প্রাক্তন এই আমলাই কি তবে রাজু বিস্তাকে সরিয়ে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হতে চলেছেন?
শ্রিংলা নিজে বলছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার এবং দেশের সেবায় রয়েছি। ভারতীয় নাগরিক হিসাবে দেশের মানুষের জন্য কাজের অধিকার আমার রয়েছে। সেটাই করছি। রাজনীতি করছি না।’’
অন্য দিকে, দার্জিলিঙের বর্তমান সাংসদ রাজু বিস্তার কথায়, ‘‘উনি কী করছেন না করছেন, তা ওঁর ব্যক্তিগত। লোকসভা ভোটে কে প্রার্থী হবে, তা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দেখবেন।’’
সূত্রের দাবি, শ্রিংলা ২২ তারিখে শিলিগুড়ির বাড়িতে যে রাম-পুজো করবেন, সেখানে জনসংযোগটাই বড় উদ্দেশ্য। তা হলে কি তিনি সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা শুনে সমাধান করবেন? শ্রিংলা বলছেন, ‘‘সমস্যা মেটাতে আমার যতটা ক্ষমতা, সেটাই করে যাচ্ছি।’’ এখানেই বিজেপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি লোকসভা কেন্দ্রের মানুষের সমস্যা রাজু বিস্তা মেটাতে পারছেন না? রাজুর দিক থেকে এই নিয়ে কোনও বক্তব্য মেলেনি। তবে, বিজেপির পাহাড়ের সভাপতি কল্যাণ দেওয়ান ও দলের সমতলের সভাপতি অরুণ মণ্ডল, দু’জনেই এক কথায় বলেন, ‘‘প্রাক্তন বিদেশসচিব নিজেকে লোকসভায় দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে তুলে ধরছেন। এতে নেতা-কর্মী, সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছেন। ওঁকে এ সব বন্ধ করতে বলা হচ্ছে।’’ সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে জিএনএলএফ সভাপতি মন ঘিসিংকে দেখা করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন রাজু বিস্তা। তখন তাঁদের সঙ্গী ছিলেন কল্যাণ দেওয়ান। আবার অরুণ মণ্ডল সমতলে বিস্তার গত পাঁচ বছরের কাজ তুলে ধরে বৃহস্পতিবার থেকে প্রচারে নেমেছেন।
শ্রিংলার সঙ্গে শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের সম্পর্কেও কিঞ্চিত টানাপড়েন রয়েছে। দলের অন্দরে আলোচনা, শিলিগুড়িতে জি২০ বৈঠকের সময়ে শ্রিংলা ডাকেননি শঙ্করকে। এ দিন প্রাক্তন বিদেশসচিব বলেন, ‘‘শঙ্কর ঘোষকে বাড়ির অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। চাই, উনি আসুন।’’ কিন্তু শঙ্কর দাবি করেছেন, এমন কোনও আমন্ত্রণ তিনি এখনও পাননি। শঙ্করের কথায়, ‘‘জি২০-র সময়ে ভুলে গিয়ে হঠাৎ রাম-পুজোয় কেন ডাকছেন, জানি না। তবে বলতে পারি, উনি নিজের পুরনো পদের গরিমা নষ্ট করছেন।’’