বাংলায় ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ নিয়ে যখন নবান্ন-রাজভবন সঙ্ঘাত চরমে, সেই আবহেই দিল্লি সফরে গিয়ে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করলেন বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শাহের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের একটি ছবি টুইটও করেন তিনি।
রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রায় নিয়মিতই মমতা সরকারকে বিঁধে চলেছেন তিনি। দিল্লি সফরে আসার আগেও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি বিধায়কদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও দেখা করে এ বিষয়েই আলোচনা করেছেন তিনি। সেই দিক দিয়ে বৃহস্পতিবারের রাজ্যপাল-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনাচক্রে শাহের সঙ্গে ধনখড়ের ওই ছবি শুভেন্দুও টুইটারে পোস্ট করেন। লেখেন, ‘সাংবিধানিক মূল্যবোধকে বজায় রেখেই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখা যায়। বাংলাকে যে অন্ধকার গ্রাস করেছে, তা থেকে মুক্তি পেতে এখন সেটাই জরুরি।’
সন্ধ্যে ৭টা নাগাদ অমিত শাহের বাসভবনে যাবেন তিনি, এই মর্মেই বিকেল ৪টে নাগাদ একটি টুইট করেছিলেন ধনখড়। তার পর রাত ৮টা নাগাদ শাহের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের একটি ছবি টুইটারে পোস্ট করেন তিনি। যদিও বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা করেছেন, সে ব্যাপারে কিছুই জানাননি তিনি। বুধবারই অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর দেখা করার কথা ছিল। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যস্ত থাকায় সেই সাক্ষাৎ হয়ে ওঠেনি। তবে শুধু শাহই নন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও তিনি দেখা করতে পারেন বলে শোনা গিয়েছিল। যদিও তা হয়ে ওঠেনি এখনও পর্যন্ত।
তবে বৃহস্পতিবার সকালেই ১১টা নাগাদ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সস্ত্রীক দেখা করে এসেছেন তিনি। টুইটেও জানিয়েছেন সে কথা। বুধবার দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী-সহ সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অরুণ কুমার মিশ্র- সঙ্গে দেখা করেছিলেন ধনখড়। তিনি বর্তমানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন। প্রসঙ্গত, দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই বাংলায় ‘রাজনৈতিক হিংসা’ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল। মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো বিষয় নিয়ে সরব হয়ে চিঠিতে ধনখড় লিখেছেন, ‘ভোটের পরে বহু মানুষ হিংসার কবলে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন। বিরোধীদের প্রচুর সম্পত্তি নষ্ট করা হয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটনা অব্যাহত। চলছে নারী নির্যাতনও। রাজ্যের এই পরিস্থিতি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও আপনি নীরব থেকেছেন। এমনকি মন্ত্রিসভার বৈঠকেও এ নিয়ে কোনও আলোচনা করেননি।’