—নিজস্ব চিত্র।
দামি গাড়ি বিক্রির জন্য একটি অ্যাপের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন গুড়াপের এক ব্যবসায়ী। সেই বিজ্ঞাপন দেখে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার ড্রাফ্টের বদলে গাড়িটি হাতবদলও করেছিলেন। অভিযোগ, ভুয়ো ড্রাফ্ট দিয়ে গাড়িটি হাতিয়ে নেওয়া হয়। বছরখানেক পর সোমবার সিঙ্গুর থেকে ওই গাড়িটি উদ্ধার করে ব্যবসায়ীর হাতে তুলে দিল পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, আরটিও অফিসের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে এই প্রতারণা চক্র।
পুলিশ সূত্রে খবর, হুগলি জেলার গুড়াপের বাসিন্দা স্বরাজ ঘোষ তাঁর মারুতি-সুজুকি আর্টিগা গাড়িটি বিক্রি করার জন্য বছরখানেক আগে একটি অ্যাপে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন। ওই অ্যাপের মাধ্যমে পুরনো জিনিসপত্র কেনাবেচা করা হয়। স্বরাজের দাবি, ওই বিজ্ঞাপন দেখে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এক ব্যক্তি। ৫,৭০,০০০ টাকায় গাড়িটি কিনতে রাজি হন তিনি। এর পর এক জন চালকের হাতে ওই টাকার ড্রাফ্ট দিয়ে গাড়িটি আনতে পাঠান ওই ব্যক্তি। ড্রাফ্টের বদলে স্বরাজের কাছ থেকে ওই গাড়িটি নিয়ে যান তিনি। স্বরাজের অভিযোগ, ব্যাঙ্কে গিয়ে ওই ড্রাফ্ট ভাঙাতে দিয়ে জানতে পারেন লক্ষ লক্ষ টাকার ওই ড্রাফ্টটি আসলে ভুয়ো! এর পর গুড়াপ থানায় প্রতারণার অভিযোগ করেন স্বরাজ।
তদন্ত নেমে ঘটনার মাস তিনেক পর কলকাতা থেকে ওই ড্রাইভারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ড্রাইভারের দাবি, তাঁকে ভাড়া করে ড্রাফ্ট দিয়ে স্বরাজের কাছ থেকে গাড়ি আনতে পাঠানো হয়েছিল। এর পর গাড়িটি কলকাতার এক জায়গায় রেখে দিতেও বলা হয়েছিল। সেই নির্দেশ মতোই কাজ করেছেন তিনি।
ঘটনার পর বেশ কয়েক মাস কেটে গেলে গাড়ি ফেরত পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলেন স্বরাজ। আচমকাই সিঙ্গুরের পথে ওই গাড়িটি দেখা গিয়েছে বলে সূত্রের মাধ্যমে জানতে পারেন গুড়াপ থানার ওসি প্রসেনজিৎ ঘোষ। সঙ্গে সঙ্গে গাড়িটি অনুসরণ করতে শুরু করেন পুলিশকর্মীরা। এর পর গাড়িটি আটক করেন তাঁরা।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, শ্রীরামপুরের এক পুরনো গাড়ির শোরুম থেকে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকায় গাড়িটি কেনা হয়েছিল সিঙ্গুরের দলুইগাছায় এক মহিলার নামে। সোমবার গাড়িটি উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, দলুইগাছার যে মহিলার নামে গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন হয়েছে, তিনি জানেনই না যে সেটি চোরাই গাড়ি। গাড়ির ভুয়ো মালিক সেজে রেজিস্ট্রেশন করানো হয়েছিল বলে অভিযোগ।
তদন্তকারীদের অনুমান, আরটিও অফিসের কোনও কর্মী এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন। শ্রীরামপুরের শোরুমে গাড়িটি কী ভাবে পৌঁছল বা কার থেকে সেটি কেনা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।