লুটপাটের উদ্দেশ্যে খুন, না কি তদন্তের নজর ঘোরাতে লুট, এটা বুঝে ওঠার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ভবানীপুরে খুন হওয়া রশ্মিতা শাহের শরীরে গুলির চিহ্ন মিলেছে। সোমবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার হরিশ মুখার্জি রোডের এক ফ্ল্যাটের দু’টি ঘর থেকে উদ্ধার হয় গুজরাতি দম্পতি অশোক শাহ এবং রশ্মিতার রক্তাক্ত দেহ।
গোড়াতেই বোঝা গিয়েছিল, আততায়ী বা আততায়ীরা ঘর থেকে বেশ কিছু জিনিসপত্র নিয়ে উধাও হয়েছে। আলমারি খোলা ছিল লন্ডভন্ড অবস্থায়। পুলিশ সূত্রে খবর, খোয়া গিয়েছে নিহত দম্পতির মোবাইল দু’টিও। সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ তাঁদের বড় মেয়ে ফোন করে পাননি তাঁর বাবা-মাকে। একটি বন্ধ ছিল। অন্যটি বেজে গিয়েছে। পুলিশ সূত্র জানাচ্ছে, দেহ উদ্ধারের পরও বেশ কিছু ক্ষণ উধাও হয়ে যাওয়া একটি মোবাইল খোলা অবস্থায় ছিল। যদিও তার লোকেশন ইত্যাদি নিয়ে মুখ খুলছেন না কেউ।
কেন খুন, এ নিয়েও ধন্ধে রয়েছেন তদন্তকারীরা। নানা কিছুর সঙ্গে নিহত রশ্মিতার শরীর থেকে কিছু গয়নাও খোয়া গিয়েছে। তবে লুটপাটের উদ্দেশ্য নিয়ে খুন, না কি তদন্তের নজর ঘোরাতে লুট, এটাই এখন বুঝে ওঠার চেষ্টা করছে পুলিশ।
নিজস্ব চিত্র।
তদন্তকারীদের বড় ভরসা বাড়ির সামনের গলিতে থাকা তিনটি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ। পুলিশ কুকুর বাড়ি থেকে খানিক দূরে গিয়েই থেমে গিয়েছিল। মঙ্গলবার দুপুরে লালবাজারের গোয়েন্দাপুলিশ ত্রিমাত্রিক ভিডিয়োগ্রাফি করেছে ঘটনাস্থলে। ফ্ল্যাটের ভিতরে, বাড়ির অন্যত্র এবং দরজার সামনের গলিতে ভিডিয়ো তোলা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় নিহত দম্পতিকে প্রথম দেখতে পান তাঁদের তিন মেয়ের একজন। বাকি দুই মেয়ে অন্যত্র থাকেন। ছোট মেয়ে বাবা-মার সঙ্গে থাকতেন। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে তিনি ফ্ল্যাটের দরজা খোলা পান। ভিতরে গিয়ে দেখেন দুই ঘরে পড়ে রয়েছে বছর ৬২-র অশোক এবং বছর ৫৬-র রশ্মিতার রক্তাক্ত দেহ। এই দম্পতি শেয়ার বাজারের ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন।পুলিশ সূত্রে খবর, কিছু দিন হল ফ্ল্যাট বিক্রির চেষ্টা চালাচ্ছিলেন এই দম্পতি। দালালদের আনাগোনা চলছিল। দাম নিয়ে সমঝোতা না হওয়ার সম্প্রতি কোনও একজনের সঙ্গে অশোকের মনোমালিন্য হয়েছিল বলেও খবর।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।