নবান্ন। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মিশনে ‘রাজ্যের প্রাপ্য’ আটকে রাখার অভিযোগ তুলে এবং ফের তা বাধাহীন ভাবে পাঠানোর আর্জি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরই মধ্যে এত দিনের ‘দূরত্ব ঘুচিয়ে’ আয়ুষের প্রচারেও এগোনোর বার্তা দিল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। জেলায় জেলায় এ বারে তিন দিন ধরে ‘আয়ুষ মেলা’ করার নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে কলকাতা থেকে। লক্ষ্য, আয়ুষের প্রচার এবং প্রসার।
প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, ২০১১ সালের পর থেকে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির রং নীল-সাদা করা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মিশনে তা গেরুয়া করতে হবে। এই রঙের বৈষম্যের জন্য এই খাতে ‘রাজ্যের প্রাপ্য’ থেকে কেন্দ্র তাদের বঞ্চিত করছে, অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু রংই নয়, অন্য আরও কয়েকটি বিষয় রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, সব ক্ষেত্রেই পদক্ষেপ করা হয়েছে। তবে একটি সূত্রের কথায়, আয়ুষের বিষয়টি কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রক দেখভাল করলেও তা স্বাস্থ্য মিশনে অধীনেও আসে। আয়ুষ মেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে তা হলে কি রাজ্য সেই ‘ফাঁকটুকুও’ ভরাট করল, উঠছে প্রশ্ন।
বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে আয়ুষের (আয়ুর্বেদ, যোগ, ন্যাচারোপ্যাথি ইউনানি, সিদ্ধা, হোমিয়োপ্যাথি) প্রচারে কেন্দ্রীয় সরকার জোর দিচ্ছে। তবে এ রাজ্যের তৃণমূল সরকার দীর্ঘ সময়ে আয়ুষ চিকিৎসা পদ্ধতিকে খানিকটা এড়িয়েই চলেছে। এ বারে কিন্তু ভোল বদলে ‘আয়ুষ মেলা’ আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের অধীন পশ্চিমবঙ্গ আয়ুষ সমিতি। ৫টি স্বাস্থ্য জেলা-সহ মোট ২৭টি জেলায় এই মেলার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা। জেলাপিছু ৮ লক্ষ টাকা। রাজ্যের নির্দেশিকা পৌঁছেছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী মানছেন, ‘‘আয়ুষ সচেতনতায় মেলা হবে। মেলার মাধ্যমে মানুষজনকে এ নিয়ে সচেতন করা হবে।’’
চলতি মাসেই মেলা হবে। তিন দিন ধরে নানা আয়োজন থাকবে। সুসজ্জিত ট্যাবলোর শোভাযাত্রা, কর্মশালা, যোগ ব্যায়ামের প্রদর্শনী, ক্যুইজ, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা প্রভৃতিও থাকবে। মেলায় আয়ুষ সম্পর্কিত বইপত্রের স্টল, ওষধি গুল্ম বা বৃক্ষের স্টল থাকবে। গুল্ম বিলিও করা হবে।
বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘এটা বোধহয় বিলম্বিত বোধদয়। এত দিন আয়ুষ নিয়ে এখানে সরকারি প্রচার ছিল না। অথচ, এতে গরিব মানুষ নামমাত্র টাকায় পরিষেবা পেতে পারেন।’’ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত ঘোষের অবশ্য দাবি, ‘‘আয়ুষের প্রসারে এখানে কম গুরুত্ব দেওয়া হয় না। সাধারণ মানুষের স্বার্থে যা দরকার, সরকার তাই করে।’’