Football

এক বজ্রাঘাতে মৃত্যু একই দলের ১১ ফুটবলারের! আঁচড় লাগেনি প্রতিপক্ষের, নেপথ্যে ভয়ঙ্কর ‘কালো জাদু’?

১৯৯৮ সালের ঘটনা। যার পর দীর্ঘ ২৬ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। তবে সেই কথা বলতে গিয়ে এখনও গলা কাঁপে মধ্য আফ্রিকার দেশ কঙ্গোর কাসাই প্রদেশের অনেক মানুষের।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০৭:২৯
Share:
০১ ২০
All you need to know about story that says Lightning kills an entire football team of Congo

জাদুটোনা, বশীকরণ, বাণ মারা— এই শব্দগুলির সঙ্গে কমবেশি আমরা সকলেই পরিচিত। এইগুলিকে এক কথায় ‘কালো জাদু’ বা ‘ব্ল্যাক ম্যাজিক’ বলা হয়। এগুলি এক প্রকার তুকতাক প্রক্রিয়া।

০২ ২০
All you need to know about story that says Lightning kills an entire football team of Congo

বিশ্ব জুড়ে ‘কালো জাদু’তে বিশ্বাস করেন এমন মানুষের সংখ্যা অনেক। আবার বিশ্বাস না-করা মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। পৃথিবীতে এমন ঘটনা ঘটেছে, যার ব্যাখ্যা দেওয়ার সময় অনেকের মুখেই ‘কালো জাদু’র কথা উঠে এসেছে। উঠে এসেছে ‘কালো জাদু’ সংক্রান্ত ভয়ঙ্কর ক্ষয়ক্ষতি এবং লোকগাথার কথা।

Advertisement
০৩ ২০
All you need to know about story that says Lightning kills an entire football team of Congo

তেমনই একটি ঘটনা ঘটেছিল ১৯৯৮ সালে। এর পর দীর্ঘ ২৬ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। তবে সেই কথা বলতে গিয়ে এখনও গলা কাঁপে মধ্য আফ্রিকার দেশ কঙ্গোর কাসাই প্রদেশের অনেক মানুষের।

০৪ ২০

১৯৯৮ সালের অক্টোবর। কাসাই প্রদেশে একটি মাঠে মুখোমুখি হয়েছিল দুই ফুটবল দল। ‘বেনা শাদি’ বনাম ‘বসঙ্গা’। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে। দুই দলই একটি করে গোল করেছে।

০৫ ২০

জয় নিয়ে দুই দলই আশাবাদী। গ্যালারিতে বসে থাকা দর্শকেরাও বুঁদ হয়ে খেলা গিলছেন। ঠিক সে সময়ই অকল্পনীয় এক ঘটনা ঘটে।

০৬ ২০

কড় কড় শব্দ করে মাঠের মধ্যে ভয়ঙ্কর বজ্রপাত হয়। নিমেষে বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয় ১১ জন ফুটবলারের। আহত হন গ্যালারিতে বসে থাকা প্রায় জনা ৩০ দর্শক।

০৭ ২০

তবে অদ্ভুত বিষয়টি হল, যে ১১ জন ফুটবলারের মাঠে মৃত্যু হয়েছিল তাঁরা সকলেই একই দল— ‘বেনা শাদি’র খেলোয়াড় ছিলেন।

০৮ ২০

অবাক লাগলেও তেমনটাই নাকি ঘটেছিল। আশ্চর্যজনক ভাবে প্রতিপক্ষ দল ‘বসঙ্গা’র এক জন খেলোয়াড়েরও কোনও ক্ষতি হয়নি।

০৯ ২০

কঙ্গোর রাজধানী কিনশাসার দৈনিক ‘ল’অ্যাভনির’-এর প্রতিবেদনে সে সময় প্রকাশিত হয়, ‘‘একটি ফুটবল ম্যাচ চলাকালীন ২০ থেকে ৩৫ বছর বয়সি ১১ জন যুবকের বজ্রপাতের কারণে মৃত্যু হয়েছে।’’ সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে আরও লেখা ছিল, ‘‘বজ্রপাতের সঠিক প্রকৃতি নিয়ে মতানৈক্য দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন জন বিভিন্ন মত দিচ্ছেন।’’

১০ ২০

গৃহযুদ্ধের কারণে কাসাই প্রদেশের ওই অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে সেই প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিক ভাবে নিশ্চিত করা না গেলেও ‘ল’অ্যাভনির’-এর প্রতিবেদন ধরে পরবর্তী কালে অন্যান্য নামীদামি সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল।

১১ ২০

সেই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরই হইচই পড়ে যায়। কিন্তু কেন এমনটা ঘটেছিল, তার উত্তর খুঁজতে গিয়ে যে তত্ত্ব সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছিল, তা হল ‘কালো জাদু’।

১২ ২০

অভিযোগ ওঠে, পরাজয়ের ভয়ে প্রতিপক্ষ দলেরই কোনও খেলোয়াড় নাকি ‘কালো জাদু’ প্রয়োগ করেছিলেন ‘বেনা শাদি’র খেলোয়াড়দের উপর।

১৩ ২০

সে কারণেই এমন ঘটনা বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। ওই খেলোয়াড়কে নাকি মাঠের মধ্যে ‘অন্য রকম কিছু’ করতেও দেখা গিয়েছিল।

১৪ ২০

ওই বজ্রপাত সত্যিই ‘অন্য কোনও কারণে’ ছিল কি না তা জানা যায়নি। যদিও অনেকেই দাবি করেছিলেন, পুরো বিষয়টি নিছকই কাকতালীয় ছিল।

১৫ ২০

এক সময় পশ্চিম এবং মধ্য আফ্রিকা জুড়ে যে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগকে জাদুবিদ্যার ফল বলে বিশ্বাস করতেন ওই অঞ্চলের মানুষ। এখনও পুরোপুরি সেই বিশ্বাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি তাঁরা।

১৬ ২০

আফ্রিকার অনেক দেশেই ‘কালো জাদু’ নিয়ে চর্চার চল রয়েছে। ছোটখাটো বিষয়েও নাকি একে অন্যের উপর জাদুবিদ্যার প্রয়োগ করে ক্ষতির চেষ্টা করা হয়। জাদুবিদ্যার প্রয়োগ বেশি চোখে পড়ে কঙ্গোয়।

১৭ ২০

আরও এক বার কঙ্গোয় ফুটবল ম্যাচ চলাকালীন বজ্রপাতে একটি দলের ছ’জন খেলোয়াড় গুরুতর জখম হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছিল। সে বারও প্রতিপক্ষ দলের কোনও খেলোয়াড় জখম হননি বলে শোনা যায়।

১৮ ২০

ফুটবল ম্যাচে জাদুবিদ্যার প্রয়োগের এমন ভূরি ভূরি গল্প রয়েছে। হারতে বসা দলও জাদুবিদ্যার প্রয়োগে নাকি জয়ী হয়েছিল। যার পর আফ্রিকা জুড়ে ফুটবল ম্যাচ চলাকালীন খেলোয়াড়দের অন্য কোনও রকম কাজ (মন্ত্র পাঠ, গোলপোস্টের মাটিতে দাগ কাটা ইত্যাদি) করা নিষিদ্ধ হয়ে যায়।

১৯ ২০

কঙ্গো প্রশাসনের যুক্তি ছিল, জাদুবিদ্যায় বিশ্বাস দেশের ফুটবল ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে। এর ফলে নিজেদের দক্ষতা উন্নত করার বদলে জাদুতেই ভরসা করতে শুরু করেছিলেন খেলোয়াড়েরা।

২০ ২০

মাঠে জাদুবিদ্যা নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ার পর কোনও খেলোয়াড়কে এ রকম কিছু করতে দেখা গেলেই তাঁকে তৎক্ষণাৎ মাঠের বাইরে বার করে দেওয়া হত। কিন্তু এত কিছু সত্ত্বেও কঙ্গোর মানুষের মন থেকে জাদুর প্রতি বিশ্বাস পুরোপুরি মুছে ফেলা যায়নি।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement