চায়ের আড্ডায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার কার্শিয়াংয়ের রাস্তায়। ছবি: স্বরূপ সরকার
মঙ্গলবার প্রশাসনিক বৈঠকে জিটিএ ভোট করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই রাত থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে প্রস্তুতি। বুধবার গতি বাড়ল এই নির্বাচন করার। প্রশাসন সূত্রে বলা হচ্ছে, সব কিছু ঠিক থাকলে নতুন বছরের গোড়াতেই জিটিএ নির্বাচন হতে পারে। সরকারি সূত্রের খবর, নতুন বছরের শুরুতে ৫ জানুয়ারি নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে বলে ঠিক হয়েছে। তার পরেই কোভিডের পরিস্থিতি দেখে জিটিএ নির্বাচন ঘোষণা করা হতে পারে। মঙ্গলবারের বৈঠকে অজিত বর্ধনকে সরিয়ে দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবলমকে জিটিএ-র প্রধান সচিবের দায়িত্ব নিতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাতে জিটিএ নিয়ে বিভিন্ন স্তরে কথা বলেন তিনি। মুখ্যসচিবকেও আলাদা করে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে জিটিএ-র প্রধান সচিবের অধীনে আর এক জন সচিব নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মমতার নির্দেশে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জিটিএ-কে পুনর্গঠন করার কাজের তদারকি শুরু করেন। ঠিক হয়েছে, ভোটের আগেই জিটিএ-র প্রশাসনিক কাঠামোকে ঢেলে সাজা হবে। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ, প্রকল্পের কাজও শেষ করতে বলা হয়েছে। পাহাড়ের ৩০ কোটি টাকায় রাস্তা সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাকি প্রকল্পের কাজ পর্যালোচনা করে শুরু করা হবে। একধারে নতুন স্টিয়ারিং কমিটি গড়ে পাহাড় সমস্যা কোন পথে মেটানো হবে তা যেমন ঠিক হবে, তেমনই অন্য দিকে ভোট করে মানুষের রায় নিয়ে উন্নয়নের কাজ নির্বাচিত বোর্ডের হাতে দিতে চায় সরকার। আর পাহাড়ের পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও সূত্রের খবর।
রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘পাহাড় সমস্যা মেটানোর প্রক্রিয়াই দীর্ঘমেয়াদি বিষয়। কেন্দ্রও আলাদা করে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক শুরু করেছে। কিন্তু কবে কী হবে, তা নিয়ে তো বলা যায় না। জিটিএ-কে তাই পুরোদস্তুর সচল করে নির্বাচিত বোর্ডের মাধ্যমে কাজ চালানো হবে। পরে অন্য সিদ্ধান্ত হলে তা দেখা যাবে।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জিটিএ ভোটে জোরদার লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। অনীত বলেছেন, ‘‘পাহাড়ের কাজের জন্য পাহাড়ে ভোট প্রয়োজন। সরকার নিশ্চয়ই ঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।’’ তবে বিমল গুরুং জিটিএ ভোটে লড়বেন না বলে আপাতত জানিয়েছেন। এর বাইরে তৃণমূলের পাহাড়ের একাংশ ভোটে লড়াইয়ের পক্ষে। গোর্খা লিগ, সিপিআরএমের মতো দল ছাড়া জিএনএলএফ এবং বিজেপি জিটিএ ভোট নিয়ে এখনও দ্বিধায়। বিজেপির পাহাড় কমিটির সভাপতি কল্যাণ দেওয়ান বলেছেন, ‘‘কেন্দ্র ত্রিপাক্ষিক বৈঠক শুরু করছে। সেটা নিয়েই রাজ্যের তৎপর হওয়া দরকার, জিটিএ ভোট নিয়ে নয়।’’