নভেম্বরের শুরুতেই তিন দিনের বর্ধিত অধিবেশনে বসছে সিপিএম রাজ্য কমিটি। —প্রতীকী ছবি।
পশ্চিম মেদিনীপুরের নেতার সঙ্গে হয়তো বসবেন জলপাইগুড়ির নেতা। হুগলির নেতার সঙ্গে হয়তো মত বিনিময় করবেন মালদহের নেতা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নেতার পাশে বসিয়ে দেওয়া হতে পারে ঝাড়গ্রামের কাউকে। এ ভাবেই রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশনে গোষ্ঠী আলোচনার (গ্রুপ ডিসকাশন) পরিকল্পনা নিয়েছে সিপিএম।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সূত্রের খবর, আগামী ৩ থেকে ৫ নভেম্বর হাওড়ায় অনুষ্ঠিতব্য রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশনে সংগঠন ও আন্দোলনের বিষয়ে জেলা স্তরের নেতাদের মতামত নিয়ে রূপরেখা চূড়ান্ত করতে চাইছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।
রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশনে থাকবেন সমস্ত জেলার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। গণসংগঠনগুলির বাছাই নেতৃত্বকে থাকতে বলা হয়েছে। যদিও যুব সংগঠনের প্রথম সারির নেতারা সেখানে থাকতে পারবেন না। কারণ ৩ নভেম্বর থেকেই তাঁরা ‘ইনসাফ যাত্রা’ শুরু করবেন। কোচবিহার থেকে সেই কর্মসূচির সূচনা হবে বর্ধিত অধিবেশন শুরুর দিনই। সিপিএম সূত্রের খবর, সংগঠন ও লোকসভা ভোটের আগে দল কী ধাঁচে আন্দোলন করবে, সেই মতামত গোষ্ঠী আলোচনার মাধ্যমে পেতে চান মহম্মদ সেলিমরা। প্রতিটি গ্রুপের পর্যবেক্ষক হিসাবে থাকবেন এক জন করে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। তাঁরা সেই আলোচনার নির্যাস তুলে ধরবেন। তার পর চূড়ান্ত হবে সব।
বৃহস্পতিবার এক দিনের পলিটব্যুরোর বৈঠক হয়েছে দিল্লিতে। তার পর শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। সেখানে লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে রাজ্যে রাজ্যে আসন সমঝোতার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার কথা। কেন্দ্রীয় কমিটির সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম কী করবে তা-ও চূড়ান্ত হবে তিন দিনের বর্ধিত অধিবেশন থেকে। বঙ্গ সিপিএম আগেই স্পষ্ট করেছে, সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ তৈরি হলেও তার শরিক তৃণমূলের সঙ্গে কোনও সমঝোতা করা হবে না। ঠিক একই ভাবে কেরলেও কংগ্রেসের সঙ্গে বোঝাপড়া হবে না সিপিএমের। বাংলায় কংগ্রেস এবং আইএসএফের সঙ্গে আলিমু্দ্দিন স্ট্রিটের কী সমীকরণ হবে, তা বর্ধিত অধিবেশনেই শুনিয়ে রাখবেন সেলিমরা। যাতে পরে দলের মধ্যে না ২০২১-এর ভোটের মতো ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
আনন্দবাজার অনলাইন আগেই লিখেছিল, সিপিএম লোকসভা ভোটে কিছু আসনে গুরুত্ব দিয়ে লড়তে চায়। বর্ধিত অধিবেশনে সেই সংক্রান্ত তালিকা চূড়ান্ত হবে বলে জানা গিয়েছে। যে আসনে জোট সমীকরণে অল্প হলেও আশা রয়েছে, বলা ভাল যে যে আসনে ২০১৯-এর ভোটের মতো দল জামানত খোয়াবে না, সেগুলি চিহ্নিত করতে চায় রাজ্য সিপিএম। আলিমুদ্দিন স্ট্রিট এ-ও বুঝে নিতে চাইছে, কোন কোন জেলায় বুথ সংগঠন ঠিক কী জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে।