রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
রাজ্যে তিন বিধানসভার উপনির্বাচনের আগে লোকসভা ভোটের প্রসঙ্গ তুলে রাজ্য সরকারকে বিঁধলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘আসন্ন উপনির্বাচন হিংসামুক্ত এবং শান্তিপূর্ণ হোক। মানুষ নির্ভয়ে ভোটদানের অধিকার প্রয়োগ করুন। তা হলে দেশের সামনে প্রমাণ হবে, এ বছর লোকসভা ভোটের হিংসার ঘটনাগুলি অতীত মাত্র।’’ প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদে লোকসভা ভোটের দিন মারা গিয়েছিলেন এক জন। আর ওই ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি থেকে ফলপ্রকাশ পর্যন্ত রাজনৈতিক হিংসার বলি হয়েছিলেন ১৪ জন। এ ছাড়া, ভোটের দিনে ব্যারাকপুর, ডায়মন্ড হারবার, হুগলি-সহ বিভিন্ন জায়গায় অশান্তি ও মারামারি হয়েছিল।
রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য রাজ্যপালের এই বক্তব্যে ‘অসন্তুষ্ট’। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘লোকসভা ভোট হয়েছিল কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর আওতায়। আর কমিশন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী— দু’য়ের কোনওটাই রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত নয়। সুতরাং, লোকসভা ভোটে হিংসা হয়ে থাকলে তার দায় রাজ্যের উপর বর্তায় না।’’ ধনখড়ের মন্তব্য নিয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাজ্যপাল কী বলেছেন, জানি না। তাঁর মন্তব্য নিয়ে কিছু বলব না। তবে এ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার হাল নিয়ে প্রশ্ন সকলেরই আছে। বিশেষত মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে নানা মহল থেকে বার বার উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ কমেনি।’’ তাঁরা কি আসন্ন উপনির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী চান? বিমানবাবুর জবাব, ‘‘আমরা আলাদা করে কোনও কেন্দ্রীয় বাহিনী দাবি করছি না।’’
বিজেপি অবশ্য মনে করছে, তিন বিধানসভার উপনির্বাচনও কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই করা উচিত। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা দাবি করেছি, তিন বিধানসভার উপনির্বাচনে প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকুক। রাজ্য পুলিশ থাকুক বুথের বাইরে।’’
করিমপুর, খড়্গপুর (সদর) ও কালিয়াগঞ্জ— এই তিন বিধানসভায় উপনির্বাচন হবে আগামী ২৫ নভেম্বর। তার মধ্যে কালিয়াগঞ্জের বিধায়কের মৃত্যু হয়েছে। বাকি দুই কেন্দ্রের বিধায়কেরা সাংসদ হয়ে গিয়েছেন।