—ফাইল চিত্র।
আবহ তৈরি হয়ে গিয়েছিল শুক্রবার বিকেলে বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণের পরেই। তিনি সরকারের তৈরি করে দেওয়া বক্তৃতার বাইরে যাননি। ফলে সংবিধান এবং রীতির বাইরে তিনি যাবেন না, তেমনই ইঙ্গিত পেয়েছিল সরকার পক্ষ।
বিধানসভা থেকে রাজভবনে ফিরে সন্ধ্যায় রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহের সঙ্গে ঘণ্টা দুয়েক আলোচনার পরে প্রথামাফিক বাজেট প্রস্তাবের সঙ্গে অর্থ বিল পেশ করার অনুমোদন দেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তাঁর বিধানসভার বক্তৃতা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে যে জট তৈরি হচ্ছিল, অর্থ বিল পেশের জন্য তাঁর অনুমোদন পাওয়া নিয়েও তেমনই অন্য জটিলতার আভাস মিলছিল। এ দিন দু’টিই কাটল।
অর্থ বিল পেশ করার জন্য অনুমোদন দেওয়ার আগে রাজ্যপাল সরকারের কাছে বাজেট প্রস্তাবের কিছু বিষয়ে বিশদ ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র এবং পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় চার দিন আগে তাঁর সঙ্গে দেখা করার পরে ধনখড় তাঁদের কাছে এ কথা জানান। অর্থমন্ত্রী রাজ্যপালকে বলেছিলেন, বাজেট প্রস্তাব আগাম দেখানোর অসুবিধে আছে। এর আগেও এমন কখনও হয়নি। রাজ্যপাল তা মানেননি।
আরও পড়ুন: বিজেপির মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার, গ্রেফতার কৈলাস, মুকুল, সায়ন্তন
এই অবস্থায় তিনি অর্থ বিল পেশের অনুমোদন না দিলে জটিলতা কতটা বাড়তে পারে, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ে নবান্নের। অপর দিকে নানা মহল থেকে রাজ্যপালকেও পরামর্শ দেওয়া হতে থাকে রাজ্যের আর্থিক খরচের বিষয়টি বাজেটের সঙ্গে জড়িত। সে ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দ পাশ না হলে সরকারের কাজকর্ম তো দূরের কথা, কর্মীদের বেতনও আটকে যেতে পারে।
এ দিন বিধানসভায় তাঁর বক্তৃতার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে রাজ্যপাল যখন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে চা খেতে যান, তখনও তাঁর কাছে অর্থ বিল পেশে অনুমোদনের বিষয়টি তোলা হয়। ধনখড় আগেই রাজ্যের তিন অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেলকে রাজভবনে তলব করে রেখেছিলেন। কথা ছিল, তাঁরা বিকেল পাঁচটায় রাজ্যপালের কাছে যাবেন। সেই মতো প্রথমে ওই তিন জনের সঙ্গে কিছুক্ষণ বৈঠক করে পরবর্তী ধাপে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বসেন রাজ্যপাল। তখন রাজভবনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অর্থ সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীও।
রাজভবন পরে জানায়, রাজ্যপাল যে সব তথ্য জানতে চেয়েছিলেন, তা তাঁকে জানানো হয়েছে। তার পরে তিনি অর্থ বিল পেশে অনুমোদন দিয়েছেন।