রাজভবনে জগদীপ ধনখড় ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎ। নিজস্ব চিত্র
দু’তরফ থেকেই একটানা ‘গোলাবর্ষণ’ চলছিল গত কয়েক দিন ধরে। তুঙ্গে উঠেছিল রাজ্যপাল এবং শিক্ষামন্ত্রীর বাগ্যুদ্ধ। কিন্তু বছরের শেষ দিনে সন্ধির ছবি। রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দু’জনের বৈঠক হল। সহাস্য ছবি সামনে এল। আলোচনায় তিনি অত্যন্ত খুশি, টুইটে এমনও জানালেন রাজ্যপাল।
মঙ্গলবার বিকেলের দিকে রাজভবনে গিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্য সরকার পোষিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সম্পর্কে কিছু তথ্য চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ২৫ ডিসেম্বর একটি চিঠি লিখেছিলেন রাজ্যপাল। ২৬ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী সে চিঠির উত্তর দেন। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিশদ তথ্য তাঁকে দেবেন— রাজ্যপালকে এ কথাই চিঠিতে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন সেই বৈঠকই হল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতোই রাজভবনে গিয়ে বৈঠক করলেন পার্থ। বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সম্পর্কে ধনখড় যা জানতে চেয়েছিলেন, তা বিশদে জানিয়ে এলেন।
আরও পড়ুন: মায়ের মাথায় পর পর হাতুড়ির আঘাত অধ্যাপিকার, সল্টলেকে অভিজাত আবাসনে হুলস্থুল
ঠিক কোন কোন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় কোথাও মুখ খোলেননি। রাজভবনের তরফেও বৈঠকের বিশদ তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু বৈঠক শেষ হওয়ার পরে টুইট করেন রাজ্যপাল। সেখানে লেখেন যে, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ‘অত্যন্ত মনোরম এবং আন্তরিক বৈঠক’ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যপাল নতুন বছরের শুভেচ্ছাও এ দিন জানান ওই টুইটেই।
বৈঠকের পরে তথা বছরের শেষ দিনে যে সন্ধির ছবি ফুটে উঠল, গত কয়েক দিন ধরে পরিস্থিতি কিন্তু ঠিক তার উল্টো ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠি টুইটারে প্রকাশ করে রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন যে, শিক্ষাক্ষেত্রের পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর যে চেষ্টা তিনি করছেন, তা ফল দিতে শুরু করেছে। ধনখড়ের এই টুইটকে মোটেই ভাল ভাবে নেননি পার্থ। পাল্টা টুইট করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি যে হেতু তিনি টুইটারে প্রকাশ করেছেন, সে হেতু উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এই সরকারের নানা সাফল্যের তথ্যও টুইটারেই তুলে ধরা হচ্ছে— এমনই লিখেছিলেন পার্থ। তাতেই থামেনি বাগ্যুদ্ধ। রাজ্যপাল ফের টুইট করে পার্থকে কটাক্ষ করেন। পার্থও পাল্টা আক্রমণে গিয়ে জানান— জোর খাটিয়ে কিছু করতে পারবেন না রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন: সন্ত্রাসে মদত বন্ধ না হলে অভিযানের অধিকার রয়েছে, পাকিস্তানকে গোলা ছুড়লেন নয়া সেনাপ্রধান
সেই নিরন্তর ‘গোলাবর্ষণে’ ইতি পড়ল বছরের শেষ দিনে। রাজ্যপালের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর ‘আন্তরিক’ বৈঠক হল। রাজভবন এবং নবান্নের যে নিরন্তর সংঘাত গত কয়েক মাস ধরে গোটা রাজ্য দেখছে, বছরের শেষ দিনটায় সে ছবি আর রইল না।