Governor CV Ananda Bose

আনন্দের অন্দরমহল এ বার কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে? তৃণমূল বলল, ভূত দেখছেন রাজ্যপাল, তাই এত জটিলতা

রাজভবনের অন্দরমহল থেকে কলকাতা পুলিশকে সরিয়ে দিতে চাইছেন রাজ্যপাল। বদলে দায়িত্বে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কেন সিআরপিএফ রাখতে চায় রাজভবন, সে বিষয়ে অবশ্য স্পষ্ট কিছু বলা হয়নি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:২২
Share:

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।

আরও একটি নতুন সংঘাতে রাজভবন এবং নবান্ন। রাজভবনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের থাকার জায়গা (রেসিডেনশিয়াল ফ্লোর) এবং অফিস তল্লাটে সিআরপিএফ মোতায়েন করার বিষয়ে পদক্ষেপ করল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের সচিবালয়। রাজভবন সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছেও বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, রাজভবনের ওসি-র (যিনি কলকাতা পুলিশে কর্মরত) কাছে সুপারিশ করা হয়েছে, রাজ্যপালের থাকার জায়গা ও অফিস তল্লাট থেকে যেন কলকাতা পুলিশকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

তবে অন্দরে না থাকলেও রাজভবনের বাইরের এলাকা, গেট, উঠোন— ইত্যাদি এলাকার নিরাপত্তা যেমন কলকাতা পুলিশ সামলায়, তেমনই সামলাবে তারা। ওই বিষয়ে রাজভবন কিছু বলেনি। মূলত রাজভবনের ‘অন্দরমহল’ থেকে কলকাতা পুলিশকে সরিয়ে দিতে চাইছেন রাজ্যপাল। কেন কলকাতা পুলিশকে সরিয়ে রাজ্যপাল নিজের থাকার জায়গা ও অফিস তল্লাটে সিআরপিএফ রাখতে চান, সে বিষয়ে রাজভবন স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। তবে সূত্রের খবর, রাজভবনের কোনও কোনও অংশে এমন ধারণা তৈরি হয়েছিল যে, রাজ্যপাল এবং তাঁর পারিপার্শ্বিকের উপর কলকাতা পুলিশের ওই বাহিনী ‘নজরদারি’ করছে। সেই কারণেই কলকাতা পুলিশকে সরিয়ে অন্দরমহলে সিআরপিএফের মতো কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত। রাজ্যপাল কেন্দ্রীয় সরকার তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধি। তাই তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরেই বেশি ‘আস্থা এবং ভরসা’ রাখছেন। তবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে ইতিমধ্যেই জারি-থাকা সংঘাতের আবহে রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্ত যে নতুন মাত্রা যোগ করল, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

প্রত্যাশিত ভাবেই রাজ্যপালের ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে শাসক তৃণমূল তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছে। শাসকদলের অন্যতম মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘আসলে রাজ্যপাল জটিলতা তৈরি করছেন বলেই উনি ভূত দেখছেন! নতুন করে জট পাকাতে চাইছেন। এর আগেও তো অনেক রাজ্যপাল এসেছেন। কেউ তো এমন করেননি। এমনকি, জগদীপ ধনখড়ও নন।’’

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে নবান্ন-রাজভবন সংঘাত চরমে পৌঁছেছে। সেই সঙ্গেই যোগ হয়েছে ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায়ের শপথগ্রহণ নিয়ে রাজ্য বিধানসভার সঙ্গে রাজ্যপালের ‘টানাপড়েন’ সংক্রান্ত জটিলতা। বিধানসভার বদলে রাজভবনে শপথগ্রহণের প্রস্তুতি মেওয়ার পর তা পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের খারিজ করে দেওয়া এবং তার পরে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাদ দিয়ে ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে শপথগ্রহণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। স্পিকার পাল্টা চিঠিতে রাজ্যপালকে বলেছেন, ‘‘আপনিই শপথবাক্য পাঠ করান। কিন্তু সেটা বিধানসভায় হোক।’’ এর পর শোনা যাচ্ছে ‘তৃতীয়’ কাউকে ভাবছেন রাজ্যপাল। এ সবের মধ্যেই অন্দরমহলের নিরাপত্তার জন্য আর কলকাতা পুলিশের উপর যে রাজভবন আর আস্থা রাখতে পারছে না, তা স্পষ্ট হয়ে গেল রাজ্যপালের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement