রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়ায় পঞ্চায়েত ভোট দেখতে যাবেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। শনিবার রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে শুক্রবার রাতে রাজভবনের তরফে ওই দুই জেলার জেলাশাসককে চিঠি পাঠিয়ে এ বিষয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যপাল ভোট পরিদর্শনে যাচ্ছেন এ রকম ঘটনা এ রাজ্যে নজিরবিহীন।
রাজভবনের তরফে ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে, শনিবার সকাল সওয়া ৬টা নাগাদ রাজভবন থেকে সড়কপথে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরের বাসুদেবপুর একটি বুথের উদ্দেশে রওনা দেবেন। সকাল ৬টা ৫৫ মিনিট নাগাদ সেখানে পৌঁছে বুথ পরিদর্শন করবেন। বাসুদেবপুর থেকে তিনি নদিয়ার উদ্দেশে রওনা দেবেন। সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ নদিয়ার বেশ কয়েকটি বুথ ঘুরে দেখবেন রাজ্যপাল। সকাল ১০টা নাগাদ সেখান থেকে রওনা দিয়ে দুপুর ১২টায় রাজভবনে পৌঁছে বেলা ২টো নাগাদ উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের উদ্দেশে সড়কপথে রওনা দেবেন আনন্দ বোস। দুপুর ৩টে নাগাদে বসিরহাটে পৌঁছে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সেখানকার বিভিন্ন বুথ পরিদর্শন করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ রাজভবনে ফিরে আসবেন তিনি।
শুক্রবার মুর্শিদাবাদে সফরে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখানে নবগ্রামে খুন হওয়া তৃণমূল নেতার বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এর পর যান খড়গ্রামের নিহত কংগ্রেস কর্মীর বাড়ি। এর পর সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যপাল জানান, তিনি ভোটের দিনও বিভিন্ন বুথ পরিদর্শনে যাবেন। সেই মর্মেই রাজভবন থেকে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয় দুই জেলার প্রশাসনকে।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর, মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন থেকেই প্রচার শেষ দিন পর্যন্ত নানাবিধ হিংসার সাক্ষী থেকেছে বাংলা। প্রাণ হারিয়েছেন শাসক, বিরোধী দুই পক্ষের লোকজন। রাজ্যপাল নিজে হিংসা কবলিত ভাঙড়, ক্যানিং, কোচবিহার পরিদর্শন করেছেন। শুক্রবার গিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদে। পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সামগ্রিক হিংসার আবহে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহকে তীব্র আক্রমণ করে রাজ্যপাল বলেছিলেন, ‘‘আপনাকে আমি নিয়োগ করেছিলাম। কিন্তু আপনি রাজ্যবাসীকে হতাশ করেছেন। দায়িত্ব পালনে আপনি ব্যর্থ। এখনও সময় আছে, সঠিক পদক্ষেপ করুন। রাজধর্ম পালন করুন।’’এর ফলে শাসকদলের আক্রমণের মুখেও পড়তে হয়েছে। হিংসা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে রাজ্যপাল সাংবিধানিক সীমা লঙ্ঘন করেছেন বলেও অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। ভোটের দিন রাজ্যপাল বুথ পরিদর্শনে গেলে সেখানকার সামগ্রিক পরিস্থিত কতটা জটিল হতে পারে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।