দণ্ডি কাটানোর ঘটনায় পদক্ষেপ করবেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বসু। — ফাইল চিত্র।
আদিবাসী মহিলাদের দণ্ডি কাটানোর ঘটনায় পদক্ষেপ করবেন তিনি। চিঠি দিয়ে বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক মনোজ টিগ্গাকে জানালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বৃহস্পতিবার বিজেপির আদিবাসী নেতা তথা বিধায়ক মনোজকে চিঠিটি পাঠিয়েছেন তিনি। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় বিজেপিতে যোগদানের ‘অপরাধে’ তিন জন আদিবাসী মহিলাকে দণ্ডি কাটানো হয়েছিল। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের কারণেই ওই আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল।
৬ এপ্রিল তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন তিন জন আদিবাসী মহিলা। কিন্তু ৭ এপ্রিল রাতে তিন আদিবাসী মহিলা-সহ চার জন বালুরঘাট শহরের কাঁঠালপাড়ায় তৃণমূল কার্যালয়ে যান। সেখানে দণ্ডি কেটে কার্যালয়ে ঢুকতে দেখা যায় ওই তিন মহিলাকে। পরে তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী প্রদীপ্তা চক্রবর্তী। সেই দৃশ্য প্রকাশ্যে আসতেই শাসক তৃণমূলকে আক্রমণ করতে শুরু করে বিজেপি। এই ঘটনায় গোটা আদিবাসী সমাজকে কলঙ্কিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। প্রদীপ্তাকে গ্রেফতারের দাবিতে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন দলের দুই বিধায়ক জুয়েল মুর্মু এবং বুধারাই টুডু।
তার পরেই মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজের নেতৃত্বে বিজেপির সাত জন আদিবাসী বিধায়ক রাজভবনে গিয়ে এই ঘটনায় রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ দাবি করেন। লিখিত আকারে বিজেপি বিধায়কেরা স্মারকলিপিও জমা দেন রাজ্যপালের কাছে। জবাবি চিঠিতে রাজ্যপাল বলেছেন, “তপনে আদিবাসী মহিলাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় আপনি-সহ আপনাদের সাত জন বিধায়ক যে দাবিপত্রটি দিয়ে বিষয়টিতে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন সেই মর্মেই আপনাকে চিঠি দিয়ে জানাচ্ছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” এমন চিঠি পেয়ে বিজেপি বিধায়ক মনোজ বলেন, “আমাদের চিঠি পেয়ে রাজ্যপাল বিষয়টি দেখছেন। তিনি আমাদের অভিযোগটি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা অপেক্ষা করব তাঁর সদর্থক পদক্ষেপের।”
রাজ্যপালের এমন পদক্ষেপের পর ফের নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে মনে করছে বাংলার রাজনীতির কারবারিদের একাংশ। কারণ, যিনি এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন সেই প্রদীপ্তাকে মহিলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই জায়গায় দায়িত্ব পেয়েছেন স্নেহলতা হেমব্রম। সম্প্রতি জনসংযোগ যাত্রায় বেরিয়ে ওই আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ছাড়াও নেওয়া হয়েছে প্রশাসনিক পদক্ষেপ। তার পরেও বিজেপি বিধায়কদের কথায় রাজভবনের এই সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে শাসকদল।