সি ভি আনন্দ বোস-অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
মঙ্গলবার অনেক রাতে দিল্লি থেকে রাজভবন ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই দিনেই রাজভবন ছে়ড়ে নিজের রাজ্য কেরলে উড়ে গিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবন সূত্রে খবর, তৃণমূলের কর্মসূচি ঘোষণার অনেক আগে থেকেই কেরল যাওয়ার কথা ঠিক হয়েছিল রাজ্যপালের। সেই নির্দিষ্ট কর্মসূচি মেনেই তিনি কলকাতা ছেড়েছেন। মঙ্গলবার রাতে দিল্লিতে অভিষেক বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আমাদের সঙ্গে দেখা না করে পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। রাজ্যপাল কেন্দ্রের প্রতিনিধি। আমরা তাই তাঁর সঙ্গে দেখা করে বাংলার বঞ্চিত মানুষের কথা বলব। যে ৫০ লক্ষ চিঠি আমরা নিয়ে এসেছিলাম, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তা নেননি। তাই সেই চিঠিগুলি আমরা রাজ্যপালকে দেব।’’ কিন্তু রাজ্যপাল রাজভবনে না থাকায় তাঁর এই ঘোষণা কতটা কার্যকর হবে তাই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
রাজ্যপালের কেরল যাওয়ার খবরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, তাহলে কি রাজ্যপালহীন রাজভবনের সামনেই ঘেরাও কর্মসূচি করবেন অভিষেক? শাসকদলের তরফেই খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে, যে আদৌ রাজ্যপাল বৃহস্পতিবার কলকাতায় ফিরবেন কি না। তবে রাজভবনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল বোসের কলকাতা ফেরার বিষয়ে তাদের কাছে কোনও নিশ্চিত খবর নেই। তাই তারা ধরেই নিচ্ছে, বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল রাজভবন থাকবেন না। সে ক্ষেত্রে তৃণমূল নেতৃত্ব সমাবেশের পরে যদি রাজ্যপালের দফতরে কোনও ডেপুটেশন জমা দেন, তবে তা নেওয়ার প্রস্তুতি রাখছে রাজভবন। প্রয়োজনে তারা সেই ডেপুটেশনের কপি পাঠিয়ে দেবেন কেরলে রাজ্যপালের কাছে।
মঙ্গলবার দিল্লিতে গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের সঙ্গে সাক্ষাতের আবেদন জানালেও শেষ পর্যন্ত দেখা করার জন্য সময় দিয়েছিলেন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি। কিন্তু মঙ্গলবার অনেক রাতে তিনি জানিয়ে দেন, তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন না। এমন কথা জানতে পেরেই কৃষি ভবনের ভিতরে অভিষেকের নেতৃত্বে ধর্না শুরু হয়। তার পর দিল্লি পুলিশ কৃষি ভবন থেকে বার করে মুখার্জি নগর থানায় নিয়ে যায় তৃণমূল নেতৃত্বকে। সেখান থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই অভিষেক এক লক্ষ কর্মী নিয়ে রাজভবন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করে দেন।
কর্মসূচি প্রসঙ্গে জানা গিয়েছিল, রাজ্যপাল যে হেতু রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান এবং কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে রাজ্যের দায়িত্বে রয়েছেন, তাই তাঁর কাছেই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো হবে। কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে, রাজ্যপাল রাজভবনে নেই। তবে তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্ব নিজেদের ঘোষিত কর্মসূচিতে অনড়। মঙ্গলবার রাত থেকেই কলকাতার কর্মসূচির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। তবে এ বিষয়ে দলের তরফে কেউই কোনও মন্তব্য করতে চাইছেন না। এক প্রবীণ নেতার কথায়, কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন অভিষেক, তাই তিনিই যা বলার বলবেন।