প্রতীকী ছবি।
এ বার পাউচ প্যাকে সরকারি দিশি মদ! জঙ্গলমহলের মহুয়ার গন্ধ মেশানো পাউচের দাম ২০ টাকা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ডিসেম্বরে বড় দিনের আগেই রাজ্যের বাজারে এসে পড়বে ৭০ডিগ্রি দিশি মদের পাউচ প্যাক। নবান্ন ইতিমধ্যেই সস্তার দিশি বাজারে আনার ছাড়পত্র দিয়েছে। তবে এখনও দিশি পাউচের কোনও নির্দিষ্ট নাম দেওয়া হবে কি না, তা ঠিক করেনি আবগারি দফতর।
সরকারি সূত্রের দাবি, চোলাইয়ের রমরমা রুখতেই বহুদিন ধরে পরিকল্পনা চলছিল আবগারি দফতরে। গ্রহণযোগ্য সমাধান হিসাবে বলা হচ্ছিল, চোলাইয়ের দামে যদি সরকারি মদ আনা যায় তবে রোখা যাবে চোলাই কারবারিদের। কিন্তু ৬০ ডিগ্রির দিশি মদের দাম এখন বোতল পিছু ১০০ টাকার বেশি। যেখানে অর্ধেক দামে সম পরিমাণ চোলাই মদ বাজারে বিক্রি হয়ে থাকে। সেই কারণেই আবগারি দফতর বাজার চলতি দিশি মদের চেয়ে সামান্য কমা ৭০ ডিগ্রির দিশি মদ বাজারে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন জঙ্গলমহল এবং চা বাগানে এই মদ সামান্য বিক্রি হয়, কিন্তু তাও বোতলে। দাম ৮০-৯০ টাকা। তাই মদ্যপায়ীদের কাছে তেমন জনপ্রিয় হয়নি ৭০ ডিগ্রির দিশি। সেই কারণেই আবগারি দফতর পাউচে প্যাকে ২০০ মিলিলিটার মদ ২০ টাকায় বাজারে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি মাসেই দরপত্র হেঁকে উৎপাদকদের থেকে ন্যূনতম দাম চাইবে দফতর।
দফতর সূত্রের দাবি, বছরে এখন রাজ্যে গড়পরতা ৪০ কোটি বোতল দিশি মদ বিক্রি হয়। রাজ্য সরকার বরাবরই দিশি মদের গুণগত মান বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছে। দিশি মদের বোতল এখন গড়ে ৮০ থেকে ১১৫ টাকায় পাওয়া যায়। গত দু’তিন বছরে এই দাম অনেকটাই বেড়েছে। আবগারি কর্তাদের অনেকের বক্তব্য, দাম বাড়ার ফলে খেটে খাওয়া মানুষের একটি বড় অংশ দিশি মদের বদলে চোলাই পানে উৎসাহিত হয়ে পড়েছে। করোনা সংক্রমণ, লকডাউন এবং তার জেরে কাজ হারানো মানুষের হাতে এখন রোজগারও কম। কিন্তু নেশার প্রবণতা তেমন কমেনি বলেই আবগারি কর্তারা জেনেছেন। তাই ক্রমেই রাজ্যে দিশির খদ্দেররা চোলাইয়ের পথে হাঁটছেন।
আবগারি কর্তারা জানাচ্ছেন, দিশির মদের অর্ধেক দামে চোলাই পাওয়া যায়। বছরে ৪০ কোটি বোতল দিশি মদ বিক্রি হলেও চোলাইয়ের বাজার এর প্রায় অর্ধেক। বহু চেষ্টা করেও চোলাই কারবারীদের ঠেকানো যাচ্ছে না। সস্তায় সরকারি মদ আনা হলে বহু মদ্যপায়ী চোলাই ছেড়ে সরকারি দিশি মদ পান করতে পারবেন বলে দফতের আশা। চোলাইও পাউচে বিক্রি হয়। সরকারি মদও পাউচে আনা হলে চোলাইপায়ীদের কাছে সরকারি মদও জনপ্রিয় হবে।