ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরোধিতায় বিধানসভায় গৃহীত প্রস্তাবে সরকারের পক্ষে ভোট পড়ল ১০১। যেখানে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ‘ম্যাজিক ফিগার’ ১৪৮, সেখানে সরকারি পক্ষে এত কম ভোট কেন— সেই প্রশ্ন তুলে সরব হল বিরোধী বাম ও কংগ্রেস। তাদের দাবি, মন্ত্রী-বিধায়কদেরই আর নিজেদের সরকারের প্রতি আস্থা নেই! শাসক শিবির অবশ্য ব্যাখ্যা দিয়েছে, যাঁরা ভোটাভুটির সময়ে সভায় ছিলেন না, দলের হুইপ মান্য করে তাঁরা অনুপস্থিতির কারণ জানিয়েই গিয়েছিলেন।
কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরোধিতা করে বিধানসভায় বৃহস্পতিবার এসেছিল সরকারি প্রস্তাব। কেন্দ্র ও আইনের বিরোধিতায় সহমত হয়েও প্রস্তাবের উপরে কিছু সংশোধনী এনেছিল বাম ও কংগ্রেস। রাজ্যের ২০১৪ ও ২০১৭ সালের দু’টি কৃষি সংক্রান্ত আইন বাতিলের দাবির পাশাপাশি কেন্দ্রের আচরণের আরও কিছু সমালোচনা প্রস্তাবে রাখার জন্য সংশোধনী দিয়েছিল তারা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রস্তাবের উপরে ভাষণের পরে সভা ছেড়ে যাওয়ার সময়ে দলীয় বিধায়কদের বলে যান, সংশোধনীর উপরে ভোট হবে। তাঁরা যেন সভায় থাকেন। কিন্তু ভোটাভুটির পরে দেখা যায়, শাসক পক্ষে ১০১টি ভোট পড়েছে। তার মধ্যে ৯৯ জন তৃণমূল বিধায়ক। কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যাওয়া দুই বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন ও শাওনি সিংহ রায়ের ভোট ধরে মোট সংখ্যা ১০১। আর বিরোধীদের দিকে ছিল ২৭টি ভোট।
এ বারের অধিবেশনের আগেই বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী দাবি করেছিলেন, যে ভাবে দলত্যাগের হিড়িক পড়েছে, তাতে সরকারের উচিত বিধানসভায় আস্থা যাচাই করা। ভোটাভুটির পরিসংখ্যান দেখার পরে মান্নান বলেন, ‘‘আমরা কেন বলেছিলাম আস্থা পরীক্ষা নেওয়া হোক, এখন বোঝা যাচ্ছে! সরকার হুইপ জারি করার পরেও ১০১ ভোট। দলত্যাগীদের সমর্থন না পেলে তো দু’সংখ্যা পেরোত না! মন্ত্রী-বিধায়কদেরই আর সরকারের উপরে আস্থা নেই!’’ সুজনবাবুর মন্তব্য, ‘‘সরকার যে ১০০ জনও জোটাতে পারেনি, এটা যেন তারা মাথায় রাখে। সরকার যেন দম্ভ কমায়!’’
পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘‘হুইপ দেওয়া হয়েছিল ঠিকই। তবে যাঁরা আসবেন না, তাঁরা জানিয়ে যাবেন— এই নির্দেশ ছিল। দু-এক জন অসুস্থ আছেন। মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান ছিল, আরও কর্মসূচিও ছিল। যাঁরা আসেননি বা এসে চলে গিয়েছেন, তাঁরা সকলেই দলকে জানিয়ে গিয়েছেন।’’ বিরোধীদের প্রতি তাঁর পাল্টা মন্তব্য, ‘‘আমাদের তো ১০১ হয়েছে। বিরোধীদের ২৭ কেন? মাথা গুনতিতে ওরা তো আরও বেশি ছিল!’’