প্রতীকী ছবি।
এক অভিযোগের সুরাহা করার জন্য বিধি-পদ্ধতি বদলানোর পরে আবার অন্য অভিযোগ! এবং তার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে অনেক স্কুলকে।
স্বচ্ছতার অভাব আছে বলে বিভিন্ন মহল সরব হওয়ায় সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পদ্ধতি পাল্টানো হয়েছে। অভিযোগ, স্বচ্ছ ভাবে নিয়োগ করতে গিয়ে দীর্ঘসূত্রতার দরুন প্রায় দু’বছর ধরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের অনেক স্কুলেই সহকারী প্রধান শিক্ষক নেই। ফলে স্কুলের পঠনপাঠন থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ।
শিক্ষক শিবিরের একাংশ জানান, ২০১৮ সালের অগস্টের পরে বহু স্কুলেই সহকারী প্রধান শিক্ষক করা নিয়োগ হয়নি। তার আগে সহকারী প্রধান শিক্ষকের প্যানেল অনুমোদন করত স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি। সেই কমিটির প্রাথমিক অনুমোদনের পরে চূড়ান্ত অনুমোদন দিতেন জেলা স্কুল পরিদর্শক। এই প্রক্রিয়ায় অনেক ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটির কর্তাদের পেটোয়া প্রার্থীকে ওই পদে নিয়োগের অভিযোগ আসছিল। তার পরেই সহকারী প্রধান শিক্ষকের প্যানেল অনুমোদন সংক্রান্ত নিয়মবিধি পরিবর্তন করা হয়।
এখন এই ধরনের প্যানেলের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় বিকাশ ভবনের স্কুলশিক্ষা দফতর।
অনেক শিক্ষকের বক্তব্য, ২০১৮ সালের আগে জেলা স্কুল পরিদর্শকেরা যখন সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদে নিয়োগের চূড়ান্ত অনুমোদন দিতেন, তখন বেশ তাড়াতাড়ি স্কুলগুলিতে ওই পদ পূরণ হয়ে যেত। ‘‘২০১৯-এর ২১ ফেব্রুয়ারি সহকারী প্রধান শিক্ষকের জন্য আমার আবেদনপত্র বিকাশ ভবনের শিক্ষা দফতরে গৃহীত হয়। কিন্তু এখনও চূড়ান্ত অনুমোদন পেলাম না। পদ পাইনি, অথচ সহকারী প্রধান শিক্ষকের সমস্ত কাজই করতে হচ্ছে আমাকে,’’ বলেন কোচবিহারের একটি স্কুলের শিক্ষক নবিউল ইসলাম। প্রায় একই সুরে পূর্ব মেদিনীপুরের একটি স্কুলের শিক্ষক অমিতকুমার গায়েন জানান, ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি সহকারী প্রধান শিক্ষক পদের জন্য তাঁর আবেদনপত্র গ্রহণ করে বিকাশ ভবন। কিন্তু এখনও চূড়ান্ত অনুমোদন পাননি তিনিও।
অথচ স্কুলে সহকারী প্রধান শিক্ষকের প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকে বলে জানাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ক্লাস রুটিন, পরীক্ষার রুটিন, পরীক্ষার ব্যবস্থা তো করতেই হয় তাঁদের। সেই সঙ্গে পঠনপাঠনের দেখভাল করার কথা সহকারী প্রধান শিক্ষকের। বহু স্কুলে সহকারী প্রধান শিক্ষক না-থাকায় এই সব কাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন অনেক শিক্ষক।
সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া দ্রুততর করার দাবি তুলেছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেসের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘আমাদের দাবি, দু’বছর ধরে সহকারী প্রধান শিক্ষকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের যে-সব প্যানেল শিক্ষা দফতরে আটকে আছে, অবিলম্বে সেগুলি ছেড়ে দেওয়া হোক।’’
স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই সব দিক খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত অনুমোদন দিচ্ছে বিকাশ ভবন। আবেদন অনুযায়ী ওই সব পদে নিয়োগের ব্যবস্থা হচ্ছে।