হাওড়ার শ্যাম গার্ডেনে চলছে ভাত রান্না। শুক্রবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
এ বার আর দেহরাদূন চাল নয়। ২১ জুলাইয়ের সভায় যোগ দিতে আসা কর্মী-সমর্থকদের জন্য নতুন মেনু: দু’টাকা কেজি দরের সরকারি চালের ভাত, ডাল আর ডিমের ঝোল। কয়েক মাস আগে হাওড়ার ডুমুরজলায় যুব তৃণমূলের সমাবেশে যোগ দিতে আসা ৪০ হাজার কর্মী-সমর্থককে দেহরাদূন চালের ভাত ও ডিমের ঝোল খাওয়ানোর খবরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। যার জেরে প্রবল বিড়ম্বনায় পড়েছিলেন দলীয় নেতৃত্ব। এ বার তাই আর কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি তাঁরা। সস্তার চাল, ডাল আর ডিমের উপরেই ভরসা রেখেছেন। তবে জনপ্রতি দু’টি করে ডিম বরাদ্দ হওয়ায় এক দিনে প্রায় ৪০ হাজার ডিম জোগাড় করতে গিয়ে হিমশিম অবস্থা হয়েছে তৃণমূল নেতাদের। ডিমের আকাল দেখা দিয়েছে হাওড়া শহরে। শেষে উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহর থেকে ডিম এনে অবস্থা সামাল দিতে হয়েছে।
উত্তর হাওড়ার শ্যাম গার্ডেনে প্রায় ২০ হাজার মানুষকে খাওয়ানোর দায়িত্ব নিয়েছেন উত্তর হাওড়ার তৃণমূল সভাপতি গৌতম চৌধুরী। এর আগে যুব তৃণমূলের সভায় আসা লোকজনকে খাওয়ানোর ভারও ছিল তাঁর উপরেই। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আর দেহরাদূন চাল নয়। আমরা সরকারি দামে কেনা দু’টাকা কেজির চালের ভাত, ডাল ও ডিমের ঝোলের ব্যবস্থা করেছি। এই ব্যবস্থা করতে গিয়ে ডিমের আকাল দেখা দেওয়ায় হালিশহর থেকে ডিম আনানো হয়েছে।’’ পুরুলিয়া-বাঁকুড়া থেকে ট্রেনে করে যে সমস্ত কর্মী-সমর্থক হাওড়া স্টেশনে আসবেন, তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করার ভার পড়েছে গৌতমবাবুর উপরে।
এ দিন একমাত্র উত্তর হাওড়াতেই দূরবর্তী জেলাগুলি থেকে এসে পৌঁছনো কর্মী-সমর্থকদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গৌতমবাবু জানান, এত মানুষের থাকার জন্য উত্তর হাওড়ার সমস্ত ধর্মশালা, বিয়েবাড়ি এবং হোটেল ভাড়া নেওয়া হয়েছে। রাতে খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে শ্যাম গার্ডেন বলে একটি কমিউনিটি হলে। এ দিন বিকেলে সেখানকার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আসেন জেলা সভাপতি অরূপ রায়। তিনি বলেন, ‘‘হাওড়া স্টেশন হয়েই লক্ষ লক্ষ মানুষ সভাস্থলে যাবেন। এ জন্য পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সব জায়গাতেই ঘুরছি। দূরদূরান্ত থেকে রাত পর্যন্ত মানুষজন আসবেন। তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’’
কলকাতার প্রবেশদ্বার হাওড়া স্টেশনে প্রতিবারের মতো এ বারও তৈরি হয়েছে মঞ্চ। সেখান থেকে ট্রেনে করে আসা জেলার কর্মী-সমর্থকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে উপস্থিত ছিলেন মঞ্চের দায়িত্বে থাকা দুই তৃণমূল নেতা, বাণী সিংহরায় ও বিভাস হাজরা। বাণীবাবু জানান, হাওড়া স্টেশন হয়েই দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ কর্মী সভাস্থলে যাবেন। তাই পরিস্থিতির উপরে তাঁরা কড়া নজর রাখছেন। বিভাসবাবু জানান, কর্মী-সমর্থকদের জন্য স্টেশনে বাস তৈরি থাকবে। সেই বাসে করে মিলনমেলা, কালীঘাট, ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র এবং সল্টলেকে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে থাকার জন্য। এটা বৃহস্পতিবার থেকেই চলছে। এ জন্য ১০০টি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুই নেতারই দাবি, গত বারের তুলনায় এ বার ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে ৩০ শতাংশ বেশি লোক আসতে পারে।