প্রতীকী ছবি।
পরিকাঠামো বা কর্মী না বাড়িয়েই প্রতি মাসে দেড় কোটি ডোজ় টিকা দিতে প্রস্তুত রাজ্য সরকার। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, অপর্যাপ্ত টিকা। কেন্দ্রের তরফে টিকার জোগানে ঘাটতি থাকার কারণেই তা করা সম্ভব হচ্ছে না বলেই দাবি স্বাস্থ্য দফতরের।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, “প্রতি মাসে দেড় কোটি টিকা দিতে শুধু কেন্দ্রের তরফে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে টিকা সরবরাহের প্রয়োজন। কিন্তু তা না হওয়ায় সীমাবদ্ধতার তৈরি হচ্ছে।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শনিবার পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফে পাঠানো টিকার পরিমাণ ২ কোটি ৩৬ লক্ষ ডোজ়। পাশাপাশি রাজ্য কিনেছে ১৭ লক্ষ ৭৪ হাজার ডোজ়। কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে জানানো হয়েছিল, চলতি মাসে ৭৫ লক্ষ টিকা মিলবে। সেই জায়গায় এ দিন পর্যন্ত রাজ্য টিকা পেয়েছে ৫৪ লক্ষ ডোজ়। তার মধ্যে কোভিশিল্ডের সংখ্যাই বেশি।
রাজ্য জুড়ে কোভ্যাক্সিনের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলেও জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। তাঁরা জানান, সব জেলার টিকাকেন্দ্রগুলি মিলেয়ে এক লক্ষের সামান্য বেশি ডোজ় কোভ্যাক্সিন রয়েছে। সেখানে রাজ্যে ওই টিকার দ্বিতীয় ডোজ় বকেয়ার সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার। ২১ ও ২৩ জুলাই মিলিয়ে কেন্দ্রের তরফে ২ লক্ষ ৫৫ হাজার ডোজ় কোভ্যাক্সিন পাঠানোর কথা থাকলেও তা বাতিল হওয়ায় সমস্যা আরও তীব্র হয়েছে। যদিও আগামী ২৬ জুলাই ফের কোভ্যাক্সিন আসার কথা জানিয়েছে কেন্দ্র।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কো-উইন পোর্টাল অনুযায়ী এ দিন পর্যন্ত রাজ্যে টিকা নিয়েছেন মোট ২ কোটি ৭৬ লক্ষ ৫৮ হাজার জন। তার মধ্যে প্রথম ডোজ় পেয়েছেন ১ কোটি ৯৫ লক্ষ, দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন ৮১ লক্ষ ৯০ হাজার। অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে, ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সের ৮৭ লক্ষ জন, ৪৫ থেকে ৬০ বছর বয়সের ১ কোটি ৬ লক্ষ এবং ষাটোর্ধ্ব ৮৩ লক্ষ ৪৩ হাজার জন প্রতিষেধক পেয়েছেন।
চিকিৎসকেরা জানান, করোনা প্রতিরোধে সমাজে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তোলা জরুরি। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে টিকা জোগানে যে ভাবে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে তাতে দুঃশ্চিন্তা বাড়ছে। তাঁরা আরও জানান, টিকা প্রদানের কারণেই এখন কিছু সংখ্যক সংক্রমিত হলেও সঙ্কটজনক কম হচ্ছে। তাই মৃতের সংখ্যা কমেছে। এ দিন স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় আট জনের মৃত্যু হয়েছে।
যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, কেন্দ্র জনসংখ্যার অনুপাতে প্রত্যেক রাজ্যকে টিকা দিচ্ছে। জুলাই মাসেও এ রাজ্যে প্রায় ৯০ লক্ষ টিকা আসার কথা ছিল। তাঁর ইঙ্গিত, রাজ্যে কম সংখ্যক শিবিরের ফলেই টিকাকরণ কম হচ্ছে। দিলীপবাবু বলেন, ‘‘ত্রিপুরায় ৪০ লক্ষ মানুষের জন্য ১৩০০ শিবির করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ১০ কোটি মানুষের জন্য মাত্র ১৫৫০টি শিবির!’’