—ফাইল চিত্র।
পর্যটন শিল্পে উন্নতি এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের বিকল্প আয়ের সন্ধান দিতে বিষ্ণুপুরে ‘হোম স্টে’-র উপরে জোর দিতে চাইছে প্রশাসন। এই প্রকল্প কার্যকর হলে বিষ্ণুপুরে আসা পর্যটকদের থাকার এবং খাওয়ার সুযোগ-সুবিধা বাড়বে। তাঁদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবেন যাঁরা, সেই স্থানীয় মানুষের আর্থিক উন্নতিও হবে।
মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল জানান, ‘হোম স্টে পলিসি’-তে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট ‘ফর্মে’ আবেদন করতে হবে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের। তবে শর্ত হল, আবেদনকারীর নিজের নামে বাড়ি থাকতে হবে। এই প্রকল্পে কোনও ব্যক্তি তাঁর বাড়িতে পর্যটকদের থাকার উপযোগী কক্ষ, শৌচাগার এবং স্নানাগার করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার সেই ব্যক্তিকে তিন কিস্তিতে মোট দেড় লক্ষ টাকা ভর্তুকি দেবে।
তবে এই ‘পলিসি’তে পর্যটকদের থাকার কক্ষ এবং ব্যবহারের শৌচালয় এবং স্নানাগার অবশ্যই আধুনিক মানের হতে হবে। পর্যটকদের ঘর ভাড়া দিয়ে স্থানীয় মানুষ উপার্যন করতে পারবেন।
প্রশাসন জানিয়েছে, সরকারের নিয়ম মেনে এই প্রকল্পে আবেদন করতে হবে ইচ্ছুকদের। ইতিমধ্যেই এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ইচ্ছুক ব্যক্তিরা পর্যটন দফতরে আবেদন করতে পারেন। তবে মহকুমাশাসকের দফতরেও আবেদন করা যাবে।
রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে বিষ্ণুপুর ‘মন্দির শহর’ বলে পরিচিত। মদনমোহন মন্দিরের মতো বহু প্রাচীন মন্দির এবং রাসমঞ্চ ছাড়াও ইতিহাস প্রসিদ্ধ ‘দলমাদল কামান’ এই শহরের অন্যতম আকর্ষণ। রয়েছে লালবাঁধ যমুনাবাঁধের মতো জলাধার। কিন্তু এত কিছু থাকলেও পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার সুবিধা অপ্রতুল। শহরে অনেক হোটেল থাকলেও আতিথেয়তা, খাবারের মান এবং হোটেলের পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ ওঠে মাঝেমধ্যে।
‘হেরিটেজ শহর’ বিষ্ণুপুরকে সাজাতে রাজ্য পর্যটন দফতর বিভিন্ন পদক্ষেপ করেছে। পর্যটক টানতে ধারাবাহিক প্রচারও চলছে। ‘মিউজ়িক ফেস্টিভ্যাল’, বিষ্ণুপুর মেলা ও ধ্রুপদ সঙ্গীতের অনুষ্ঠান হচ্ছে এখন। বিষ্ণুপুরের বালুচরী শিল্পকে আন্তর্জাতিক স্তরে তুলে ধরার জন্য উদ্যোগী প্রশাসন। কিন্তু প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশের মতে, পর্যটকদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা ভাল না হলে বিষ্ণুপুরের পর্যটন শিল্পের প্রসার হবে না।
প্রশাসন সূত্রের খবর, বিষ্ণুপুরে পর্যটক সংখ্যা ক্রমশ কমছে। অতীতে বিদেশ থেকে বহু পর্যটক এখানে আসতেন। সেই সংখ্যাও উদ্বেগজনক ভাবে কমেছে। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘অনেক পর্যটক এখন ঘরোয়া পরিবেশে থাকতে চান। ঘরোয়া খাবার খেতে চান। সেই দিক থেকে ‘হোম স্টে’ উপযোগী হবে।’’