মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের প্রচারে এক মাসের অতিরিক্ত মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট মিটে যাওয়ার পর মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তি জারি করল নবান্ন। মে মাসের পরিবর্তে এপ্রিল থেকে বর্ধিত হারে ডিএ পাবেন সরকারি কর্মীরা। জুলাই মাসে বেতনের সঙ্গে সেই ডিএ পাবেন তাঁরা। মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ কথা জানিয়েছে রাজ্যের অর্থ দফতর।
লোকসভা ভোটের প্রচারে মমতা বলেছিলেন, ‘‘সরকারি কর্মীদের ১ মে থেকে বর্ধিত হারে ডিএ দেওয়া হবে। টাকা পাবেন ১ জুন। আমি আলোচনা করে ঠিক করলাম, ১ মে থেকে নয়, ১ এপ্রিল থেকে টাকাটা দেব। ১ মে যখন বেতনের টাকাটা হাতে পাবেন, তখন সঙ্গে সেই বর্ধিত ভাতাও পাবেন।’’ সেই প্রতিশ্রুতি এ বার পূরণ করলেন মমতা। মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তি জারি করল নবান্ন।
বড়দিন উপলক্ষে গত বছর ২১ ডিসেম্বর কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেখানেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ৪ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি করার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ওই ঘোষণা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছিলেন। ঘোষণার পরে নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহেই সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেয় নবান্ন। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থ দফতরের তরফে ওই বিজ্ঞপ্তিটি জারি করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে দেওয়া হয় সরকারি কর্মচারী, সরকার অনুমোদিত শিক্ষাঙ্গনের কর্মচারী, স্বশাসিত সংস্থা, সরকার অধীনস্থ পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত কর্মী, পুরনিগম, পুরসভা, স্থানীয় বোর্ড এবং অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী ও তাঁদের পরিবারের পেনশন প্রাপকেরা এই সুবিধা পাবেন। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, রাজ্যপাল সব দিক খতিয়ে দেখে ডিএ দেওয়ার সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছেন।
বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আরও চার শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি করা হয়। এই নিয়ে একই বছরে দু’বার ডিএ বৃদ্ধি করে রাজ্য সরকার। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, মে থেকে আরও চার শতাংশ হারে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি করা হবে। মে থেকে আরও এক দফা ডিএ বৃদ্ধি হলে রাজ্য সরকারি কর্মীদের প্রাপ্য মোট মহার্ঘ ভাতা হয় ১৪ শতাংশ।
ডিএ বৃদ্ধি করায় কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতার ফারাক কমে হয় ৩২ শতাংশ। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা বর্তমানে ৪৬ শতাংশ ডিএ পান। এই প্রসঙ্গে মমতা এ-ও বলেছিলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষেত্রে ডিএ বাধ্যতামূলক। কিন্তু রাজ্য সরকারের ক্ষেত্রে তা নয়। রাজ্যে ডিএ ঐচ্ছিক।’’ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির ফলে সরকারের ২,৪০০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানানো হয়েছে। এতে উপকৃত হবেন রাজ্যের ১৪ লক্ষ সরকারি কর্মী।