প্রতীকী ছবি।
ভিন্ রাজ্য থেকে পরিযায়ীদের জেলায় ফেরা পুরোপুরি থামেনি। দিনে জনা কুড়ি ফিরছেনই। এরই মধ্যে বিপরীত স্রোত।
আনলক-পর্বে পশ্চিম মেদিনীপুরের সোনা-তালুক ঘাটাল ও দাসপুর থেকে স্বর্ণশিল্পীরা ভিন্ রাজ্যের কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। তবে মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাতের মতো করোনা-প্রবণ এলাকা নয়, মূলত দক্ষিণের রাজ্যেগুলিতেই ফিরছেন সোনার কারিগর ও ব্যবসায়ীরা।
ঘাটাল ও দাসপুরে প্রায় ৪৫ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন। এর ৮০ শতাংশই স্বর্ণশিল্পী। তাঁদের মধ্যে হাজার দুয়েক চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ-সহ দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ফিরে গিয়েছেন। তাঁদের কেউ কারিগর, কেউ দোকান মালিক। বাস ভাড়া করে, ব্যক্তিগত গাড়িতে রওনা দিয়েছেন কেউ। ট্রেনে, বিমানেও ফিরেছেন। দাসপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুনীল ভৌমিক এবং দাসপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আশিস হুতাইত মানছেন, অনেকে পুরনো কর্মস্থলে ফিরছেন। তবে সংখ্যাটা কম।
বেঙ্গালুরুর স্বর্ণশিল্পী সংগঠনের সভাপতি সুশীল মণ্ডল ও হায়দরাবাদ বেঙ্গলি গোল্ড স্মিথ সংগঠনের সম্পাদক মহিতোষ জানা ফোনে জানালেন, ঘাটাল মহকুমা থেকে শিল্পীরা ফিরে কাজে যোগ দিয়েছেন। কাজের বরাতও রয়েছে। তবে যেখানে সব থেকে বেশি মানুষ সোনার কাজে যান, সেই দিল্লি ও মুম্বইয়ের স্বর্ণশিল্পী সংগঠনের পক্ষে যথাক্রমে কার্তিক ভৌমিক ও কালীদাস সিংহ রায় বলেন, “এখানে এখনও কেউ আসেননি। তবে অনেকেই ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন।”
আরও পড়ুন: ‘দুষ্কর্ম’ আমপান-ত্রাণে, পদক্ষেপ মমতার
পরিযায়ীরা ফেরার পরে একশো দিনের প্রকল্পে তাঁদের কর্মসংস্থানে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। শুরু হয় নতুন জবকার্ড বিলি। তবে এই জেলায় ওই কাজে পরিযায়ী শ্রমিকেরা তেমন আগ্রহ দেখাননি। ঘাটাল ও দাসপুরের তিনটি ব্লক মিলিয়ে নতুন জবকার্ড বিলি হয়েছে মাত্র সাড়ে তিন হাজার। সোনার গয়নায় নকশা তোলা হাত মাটি কাটায় রপ্ত হয়নি। অনেকে জবকার্ডই পাননি। দাসপুর থানার রামপুর গ্রামের কার্তিক দোলই অন্ধ্রপ্রদেশের বিজওয়াড়ায় পুরনো কর্মস্থলে ফিরে গিয়েছেন। স্বর্ণশিল্পী কার্তিক ফোনে বলছিলেন, “দু’দিন মাটি কাটার কাজ করেছিলাম। তবে এই কাজে ভরসা নেই। মালিক ডাকলেন, তাই চলে এলাম।” গত শনিবার বেঙ্গালুরু ফিরেছেন ঘাটাল থানার গোপালনগরের প্রসেনজিৎ খাঁড়া। তিনি বলেন, “দু’মাস বাড়িতে ছিলাম। জবকার্ড পাইনি।” ঘাটালের মহকুমাশাসক অসীম পাল বলেন, ‘‘আবেদন না করলেও প্রশাসন যোগাযোগ করে পরিযায়ী শ্রমিকদের জবকার্ড দিচ্ছে। তবে নথিভুক্তির সংখ্যা বাড়লেও কাজের আগ্রহ কম।’’