গোয়ায় এআইসিসি-র ভারপ্রাপ্ত নেতা দীনেশ গুন্ডুরাও বলেন, ‘‘যে দলই বিজেপি বিরোধী, আমরা তাদের সঙ্গেই কথা বলতে রাজি। একসঙ্গে পথ চলতেও আপত্তি নেই। আমি এখনই কোনও নির্দিষ্ট দলের নাম বলছি না। যে কোনও দল, যারা বিজেপি-র বিরোধিতা করছে, আমরা তাদের নিয়ে চলতে চাই।’’
ফাইল ছবি।
ভোটের ফল প্রকাশের পর সরকার গঠন করতে গোয়ায় বিজেপি বিরোধী সব দলকেই ‘স্বাগত’ জানাচ্ছে কংগ্রেস। অরবিন্দ কেজরীবালের আপ, মায় তৃণমূলেও আপত্তি নেই ‘হাত’-এর। বিধানসভা ভোটের ফল বেরোনোর ঠিক আগে এমনই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন গোয়ায় এআইসিসি-র দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা দীনেশ গুন্ডুরাও। ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার রাতেই গোয়ায় পৌঁছচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ১০ মার্চ, ফল প্রকাশ পর্যন্ত অভিষেক গোয়াতেই থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, জানুয়ারি মাসে ঠিক এই প্রস্তাব দিয়েই টুইট করেছিলেন গোয়ায় তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংসদ মহুয়া মৈত্র। কিন্তু সে সময় তা নিয়ে অন্তত প্রকাশ্যে কোনও হেলদোল ছিল না কংগ্রেসের।
সূত্রের খবর, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোটের প্রস্তাব দিয়েছিলেন খোদ কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে। কিন্তু আলোচনা এগোয়নি। এর পর মহুয়াও গোয়ায় বিজেপি-কে হারাতে কংগ্রেস-সহ সমস্ত বিজেপি বিরোধী দলকে এক ছাতার তলায় আসার আহ্বান জানিয়ে টুইট করেন। তাতেও আগ্রহ দেখায়নি কংগ্রেস। এ বার ভোটের ফল বেরোনোর ঠিক আগে সেই একই কথা কংগ্রেস নেতার মুখে।
সোমবার দীনেশ বলেন, ‘‘যে দলই বিজেপি বিরোধী, আমরা তাদের সঙ্গেই কথা বলতে রাজি। একসঙ্গে পথ চলতেও আপত্তি নেই। আমি এখনই কোনও নির্দিষ্ট দলের নাম বলছি না। যে কোনও দল, যারা বিজেপি-র বিরোধিতা করছে, আমরা তাদের নিয়ে চলতে চাই।’’
দীনেশ আরও বলেন, ‘‘ভোটের সময় আপ বা তৃণমূল আমাদের সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বলেছে। আমরাও বলেছি। সেটা ভোটের সময় হয়েই থাকে। কিন্তু ভোটের পরের ব্যাপারটা আলাদা। আমি শুধু আমাদের কথাই বলতে পারি যে, বিজেপি বিরোধী যে কোনও দলের সঙ্গে যেতে আপত্তি নেই।’’
গত রবিবার গোয়া পৌঁছেই দীনেশ বলেছিলেন, ‘‘তৃণমূল এবং আপ যে বিজেপি বিরোধী, তা নিয়ে কারও কোনও প্রশ্ন নেই। অন্তত ওদের প্রচার সে কথাই বলছে। এ বার আমাদের দেখতে হবে ওরা কোন পথে যায়।’’
দীনেশের মন্তব্য আরও একটি কারণে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। মঙ্গলবার রাতে গোয়া পৌঁছচ্ছেন অভিষেক। রবিবারই গোয়ায় পৌঁছে গিয়েছেন দীনেশ। এই সফরে তাঁর সঙ্গী কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম। যে চিদম্বরমের সঙ্গে তৃণমূলের জোট-আলোচনা শুরুর পরেই থমকে গিয়েছিল। সেই সময় তৃণমূল নেতা পবন বর্মা জোট না হওয়ার ‘দায়’ সরাসরি চিদম্বরমের উপর চাপিয়েছিলেন। পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছিল কংগ্রেসও। শেষ পর্যন্ত গোয়ায় বিরোধী জোট আর দিনের আলো দেখেনি। তার পর ভোট মিটেছে। এ বার ফলের অপেক্ষা। এই প্রেক্ষিতে গোয়ায় এআইসিসি-র ভারপ্রাপ্ত নেতার দরাজ জোট-আহ্বানের মধ্যে অন্যরকম ‘তাৎপর্য’ দেখছেন বিশ্লেষকরা।