অস্ত্র-সহ ধৃত রাজেশ লামা। —নিজস্ব চিত্র।
দার্জিলিঙে আন্দোলনের জঙ্গি-যোগ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। তার মধ্যেই উত্তর-পূর্বের জঙ্গিদের সঙ্গে ‘গোর্খা লিবারেশন আর্মি’-এর (জিএলএ) যোগের সরাসরি প্রমাণ মিলল।
আসাম রাইফেলসের দাবি, মায়ানমার-অরুণাচল সীমান্তে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হয়েছে রাজেশ লামা ওরফে গণেশ রাই নামে এক জিএলএ সদস্য। সে মায়ানমারে এনএসসিএন খাপলাং গোষ্ঠীর শিবিরে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরছিল। আসাম রাইফেলস সূত্রে খবর, রাজেশ জিএলএ-র লেফটেন্যান্ট পদে রয়েছে। তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার হয়েছে। জেরায় রাজেশ জানিয়েছে, আরও গোর্খা যুবক মায়ানমারে প্রশিক্ষণ নিয়েছে।
পাশাপাশি অসম পুলিশের দাবি, দার্জিলিঙে আন্দোলন চালিয়ে যেতে উত্তর-পূর্বের জঙ্গি সংগঠনগুলির সাহায্য চেয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। পুলিশ সূত্রে খবর, অসমে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ‘ইউনাইটেড গোর্খা পিপলস অর্গানাইজেশন’। বিমল গুরুঙ্গের দলের অনেকের সঙ্গেই ওই সংগঠনের যোগাযোগ রয়েছে। অসমের গোর্খাদের ওই সংগঠনের মাধ্যমে নাগাল্যান্ডের জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে কথাবার্তা হয়েছে মোর্চা নেতৃত্বের। পাশাপাশি মূলস্রোতে ফেরা কেএলও জঙ্গিদের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়েছে অসমের কেএলও জঙ্গিদের সঙ্গেও। তাদের কাছে চাওয়া হয়েছে অস্ত্র, গুলি। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে অসমের কোকরাঝাড়, চিরাং, ওদালগুড়ি, ধুবুড়ি সীমানায় নজরদারি কড়া করা হয়েছে। অসম পুলিশ সূত্রে খবর, খাপলাং বাহিনী নেতৃত্বের লড়াই নিয়ে ব্যস্ত। সেই সুযোগে নাগাল্যান্ডে থাকা দলের জঙ্গিরা অস্ত্র বিক্রি করতে চায়। সেই সুযোগ নিতে চাইছে মোর্চা।
অসম পুলিশের দাবি, এ কে রাইফেল, বিদেশি সাব-মেশিনগান, বিদেশি পিস্তল নাগাল্যান্ড থেকে দার্জিলিঙে ঢুকেছে। সে সব অস্ত্র সম্ভবত নেপালে সরিয়ে রেখেছে মোর্চা। গোর্খাল্যান্ড পার্সোনেল বাহিনীর প্রশিক্ষণের সময় থেকে নেপালের মাওবাদীদের সঙ্গেও মোর্চা নেতাদের সদ্ভাব ছিল। অসমের গোয়েন্দাদের কাছে খবর, অস্ত্র জোগাড় করলেও দীর্ঘদিন লড়াই চালানোর মতো গুলির রসদ মোর্চার নেই। তাই গুলি কেনার চেষ্টা হচ্ছে।
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে অসমের এনডিএফবি, আবসু, পৃথক রাজ্য গঠনের দাবিতে তৈরি যৌথ মঞ্চগুলি। দার্জিলিঙে রক্তপাতের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘স্বৈরাচারী’ মনোভাবই দায়ী বলে অভিযোগ তুলেছে বড়ো সংগঠনগুলি।