মোর্চার বন্ধে থমথমে দার্জিলিং। চলছে সেনা টহলদারী।
সকালের পর নতুন করে কোনও অশান্তির ঘটনা না ঘটলেও পাহাড়ের পরিস্থিতি শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত থমথমে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ এবং সেনা টহল দিচ্ছে। এ দিন সকাল থেকে প্রশাসনিক তত্পরতায় দিনের শেষে দার্জিলিঙের পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। বৃহস্পতিবারের হিংসাত্মক ঘটনার পরে আটকে পড়া পর্যটকদের অধিকাংশই এ দিন পাহাড় ছেড়ে সমতলে নেমেছেন। পর্যটকদের ফেরা নির্বিঘ্ন করতে পর্যাপ্ত বাসের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে এনজেপি থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল।
এ দিন সকালে মংপুতে নির্মীয়মাণ আইটিআই ভবনে আগুন লাগানোর অভিযোগ ওঠে মোর্চা সমর্থকদের বিরুদ্ধে। যদিও বাসিন্দাদের চেষ্টায় দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও কাউকেই গ্রেফতার করা যায়নি। কার্শিয়াঙে পর্যটকদের বাস আটকানোর অভিযোগও ওঠে মোর্চা সমর্থকদের বিরুদ্ধে। সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে বাসটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
মোর্চার ডাকা ১২ ঘণ্টার বন্ধে এবং নতুন করে অশান্তির আশঙ্কায় পাহাড়ের রাস্তাঘাট একেবারে শুনসান। সারাদিন সরকারি দফতর খোলা থাকলেও সেগুলিতে কর্মীদের উপস্থিতির হারছিল নামমাত্র। স্কুল, কলেজ সবই বন্ধ। দোকানপাট, হোটেল প্রায় সবই বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়তে হয় অনেককে।
আরও পড়ুন: থমথমে পাহাড়ে আটকে থাকা পর্যটকদের জন্য বাসের ব্যবস্থা প্রশাসনের
চকবাজারে পর্যটকদের জন্য খিচুড়ির আয়োজন করা হয়েছে।
পাহাড়ের আইনশৃঙ্খলা দেখার জন্য জাভেদ শামিম, অজয় নন্দ ও সিদ্ধিনাথ গুপ্ত— এই তিন আইপিএস-কে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। অশান্তির উত্সস্থল ভানুভবন চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। পাহাড়ে এই অশান্তি ছড়ানো আর পর্যটক হয়রানির জন্য মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুঙ্গের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা আক্রমণের রাস্তায় হেঁটেছেন গুরুঙ্গ। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের কয়েক জন পুলিশের ওপর পাথর ছুড়েছে। মোর্চাকে ফাঁসানোর জন্য পরিকল্পনামাফিক এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের পথে না হেঁটে পর্যটকদের নিরাপদে ফেরানোর দায়িত্ব নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই।
পর্যটকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে মিরিক, দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি থেকে ৫০-৬০টি বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করার জন্য রেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের তরফ থেকে একটি বিশেষ ট্রেন দেওয়া হয়েছে। আজ রাত সওয়া ১১টায় ট্রেনটি এনজেপি স্টেশন থেকে শিয়ালদহের উদ্দেশে রওনা দেবে।
—নিজস্ব চিত্র।