প্রতীকী ছবি।
মামার বাড়িতে নিয়ে এসে চুপিসারে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছিল নবম শ্রেণির কিশোরীর। ‘চাইল্ডলাইনে’ নিজেই ফোন করে সেই খবর ফাঁস করে দেয় সে। শুক্রবার দুপুরে হাসনাবাদের এই ঘটনার জেরে মাঠে নামেন পুলিশ, বিডিও, সমাজকর্মীরা। তবে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হলেও তাকে রাখার নিরাপদ জায়গার খোঁজে জটিলতা তৈরি হয়। নিয়ম অনুযায়ী সিডব্লিউসি বা শিশুকল্যাণ সমিতির কাছে পাঠানোর আগে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ-প্রশাসন। আজ, সোমবার ওই তাকে সিডব্লিউসি-র কাছে পাঠানোর কথা।
ওই কিশোরীরা দু’ভাই, দু’বোন। বাবা মাছের কারবারি। মেয়েটি পড়তে চায়। কিন্তু অর্থাভাবেই তাকে পাত্রস্থ করতে চেয়েছিলেন অভিভাবকেরা। উদ্ধারের পরেও মেয়েটিকে কেন নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো গেল না? সদুত্তর মেলেনি। পুলিশ জানায়, শুক্রবার উদ্ধারের পরে ১৫ বছরের মহিলা পুলিশকর্মীদের তত্ত্বাবধানে মেয়েটিকে রাতে হাসনাবাদ থানায় রাখা হয়। কিন্তু শনিবার বারাসতে সিডব্লিউসি-র কোর্টে নিয়ে গিয়ে দেখা যায়, কোর্ট বসেনি। সমাজকল্যাণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘শনিবার সাধারণত সিডব্লিউসি-র ফুল বেঞ্চ বসে না। তবে প্রয়োজনে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয়ের ভিত্তিতে কোর্ট বসে।’’ সিবডব্লিউসি-র চেয়ারম্যান মানিক চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘পুলিশ তো আমায় ফোন করতে পারত!’’
ওই নাবালিকাকে উদ্ধারে যাঁরা সক্রিয় হন, তাঁদের মধ্যে শাকিলা খাতুন নামে এক সমাজকর্মী বলেন, ‘‘আমরা মেয়েটির বাড়িতে পৌঁছে দেখি, সে ছাদে দাঁড়িয়ে আছে। তার মামারা প্রথমে বিয়ের আয়োজনের কথা অস্বীকার করেন। মেয়েটিকে আমরা ইশারায় ডাকি। সে নীচে নেমে আসে। মেয়েটি তার পরিবারের অপচেষ্টার কথা বলে দেয়।’’
বাড়িতে থাকলে মেয়েটির আবার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হতে পারে বলে উৎকণ্ঠা রয়েছে সমাজকর্মীদের মধ্যে। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘জামিনদার হিসেবে সই করে বাড়ির লোক মেয়েটিকে ফিরিয়ে নিয়েছেন। বিয়ের চেষ্টা চালানোর জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন। সিডব্লিউসি সিদ্ধান্ত নেবে, ওকে কোথায় রাখা নিরাপদ হবে।’’