কন্যাপুরে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে গাড়ি। বৃহস্পতিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র
গাড়ি চালকেরা ন্যূনতম মজুরি পাচ্ছেন না, এই অভিযোগ তুলে আইএনটিটিইউসি-র পতাকা নিয়ে বিক্ষোভের জেরে বন্ধ রইল বেসরকারি সংস্থার গ্যাস পরিবহণ। পশ্চিম বর্ধমান ছাড়াও লাগোয়া রাজ্য ঝাড়খণ্ডের নানা কেন্দ্রে গ্যাস পেতে সমস্যা হল বৃহস্পতিবার। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়েও গ্যাস মেলেনি বলে অভিযোগ সিএনজি চালিত যানবাহনের চালকদের। বেসরকারি ওই গ্যাস সংস্থার আধিকারিকেরা অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এ দিন সকাল থেকে ওই সংস্থার কন্যাপুরে গ্যাস ভরার মূল স্টেশনে বিক্ষোভ শুরু করে আইএনটিটিইউসি। প্রতিদিন এই স্টেশন থেকে গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডার গাড়িতে করে আসানসোল-দুর্গাপুর এবং ঝাড়খণ্ডের নানা ছোট ‘ফিলিং সেন্টার’-এ পাঠানো হয়। কিন্তু এ দিন সকাল থেকে গাড়ির চালকেরা আইএনটিটিইউসি-র পতাকা নিয়ে পরিবহণ বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। মূল স্টেশনের সামনে সিলিন্ডার বোঝাই গাড়িগুলি সার বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকে। চালকদের তরফে ইমরান খানের অভিযোগ, ‘‘২০১০ সাল থেকে আমরা ন্যূনতম মজুরির দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের কথা কানে তুলছেন না। ন্যূনতম মজুরি না পেলে আমরা টানা পরিবহণ বন্ধ রাখব।’’
এ দিন বিক্ষোভে নেতৃত্বে দেখা যায় আইএনটিটিইউসি নেতা রাজু অহলুওয়ালিয়াকে। তিনিও দাবি করেন, ন্যূনতম মজুরি দেওয়ার প্রশ্নে বহু বার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁদের আলোচনা হয়েছে। মজুরি বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতিও মিলেছে। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। তাঁর আরও দাবি, ‘‘বুধবারও কর্তৃপক্ষের তরফে বিক্ষোভ তুলে নিয়ে আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছিল। কিন্তু আমরা সাফ জানিয়েছি, মজুরি বৃদ্ধি না হলে গ্যাস পরিবহণ বন্ধ থাকবে।’’
এই বিক্ষোভের জেরে বিভিন্ন কেন্দ্রে গ্যাস না পৌঁছনোয় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জ্বালানির সঙ্কট শুরু হয় নানা এলাকায়। বুধবার পর্যন্ত কেন্দ্রগুলিতে যেটুকু গ্যাস ছিল তা সকালে কিছুক্ষণের মধ্যেই ফুরিয়ে যায়। লম্বা সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়েও গ্যাস না পেয়ে বিপদে পড়েন চালকেরা। পড়ুয়া বোঝাই সিএনজি চালিত অটোগুলি রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে অটো চালকদের অনুরোধে কন্যাপুরের মূল ফিলিং স্টেশন থেকে গ্যাস ভরার ছাড় দেন বিক্ষোভকারীরা।
বেসরকারি গ্যাস সংস্থাটি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন প্রায় ৪০টি সিলিন্ডার বোঝাই গাড়ি আসানসোল, দুর্গাপুর ও ঝাড়খণ্ডের নানা সেন্টারে গ্যাস পরিবহণ করে। আন্দোলন মেটাতে কোনও উদ্যোগ হচ্ছে কি না, ফোনে তা জানতে চাওয়া হলে সংস্থার আসানসোলের আধিকারিক শুভঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি দিল্লিতে জরুরি বৈঠকে রয়েছি। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ আন্দোলনের জেরে মানুষের দুর্ভোগ প্রসঙ্গে আইএনটিটিইউসি-র জেলা চেয়ারম্যান ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’’