অনুপ ঘোষ
গেল বিধানসভা ভোটের আগেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সভা-সমাবেশে প্রায়ই বলতেন, রাজ্যের মানুষকে শান্তিতে রাখতে তিনি ‘পাহারাদারে’র ভূমিকা পালন করবেন। তাতে ভরসা পেয়ে এ বার সেই ‘পাহারাদারে’র কাছে হারানো মোবাইল ফোন খুঁজে পাওয়ার আবেদন করলেন গড়বেতার এক বাসিন্দা।
গড়বেতার সানমুড়া গ্রামের বাসিন্দা অনুপ ঘোষ পেশায় কীটনাশক ব্যবসায়ী। গত ৫ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নবান্নের ইমেল আইডিতে সরাসরি ই-মেল করেছেন অনুপ। লিখেছেন, ‘আমার মোবাইল ফোনটি গত ২৮ ডিসেম্বর দুপুর ২টো থেকে ২.৩০-এর মধ্যে গড়বেতার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে হারিয়ে যায়। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ, ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক বিভাগ-সহ স্থানীয় থানায় জানানো সত্ত্বেও সেটি পাওয়া যায়নি। ফোনটিতে মূল্যবান তথ্য আছে। এ বিষয়ে দ্রুত ইতিবাচক পদক্ষেপ প্রার্থনা করছি’। ই-মেলের সঙ্গে ফোনের মডেল, আইএমইআই নম্বর, কেনার রসিদ, পুলিশের কাছে আবেদন করার প্রতিলিপিও জুড়ে দেন তিনি।
সাড়ে ১১ হাজার টাকার স্মার্টফোনটি অনলাইনে কিনেছিলেন অনুপ। তিনি বলছেন, ‘‘ব্যাঙ্কে গিয়েছিলাম। সেখানেই ফোনটি হারিয়ে যায়। সেই দিনই গড়বেতা থানায় জিডি করি। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছি। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যে ভরা মোবাইলটি না পেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ই-মেল করেছি।’’ কিন্তু এ জন্য একেবারে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন? অনুপের জবাব, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সব বিষয়েই ভরসা দিচ্ছেন। দিদি প্রায় বলেন, মানুষের কোনও অসুবিধা হলে সরকারি দফতরে জানাতে। তাই ফোন হারানোর বিষয়টি জানিয়েছি।’’ পাশাপাশি অনুপ যোগ করেন, ‘‘থানায় জিডি করেছি। স্থানীয় পুলিশ ও জেলা পুলিশ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে তদন্ত করছে। যাতে দ্রুত সুরাহা হয় সে জন্য, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছি।’’ ডিএসপি (অপারেশন) দুর্লভ সরকার জানাচ্ছেন, ‘‘তদন্ত চলছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
খোঁচা দিতে ছাড়ছে না বিজেপি। বিজেপির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস মিশ্র বলেন, ‘‘এই রাজ্যে পুলিশ-প্রশাসনের উপরে মানুষের যে আস্থা নেই, তার বড় প্রমাণ এটাই। একটা ফোন হারালেও যদি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করতে হয়, তা হলে তা মোটেই ভাল প্রশাসনের লক্ষণ নয়।’’ তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরা পাল্টা বলছেন, ‘‘দিদিকে বলো কর্মসূচিতে কত মানুষ উপকৃত হয়েছেন, যে এখনও দিদির কাছেই আর্জি জানান। গড়বেতার ওই ব্যক্তিও নিশ্চয় দিদিকে আপনজন ভেবে ফোন হারানোর কথা বলেছেন।’’