FSSAI

Health: পরীক্ষা গাড়ি তৈরি, রাস্তার খাবারে ভেজাল ধরতে রাজ্যের পথে নামবে পুরভোট মিটলেই

খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ২০১১ সালে দেশের সব রাজ্যের আইনকে এক ছাতার তলায় আনে কেন্দ্র। এফএসএসএআই-এর অধীনে গোটা দেশে খাদ্য সুরক্ষা আইন কার্যকর হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২০:১৬
Share:

জেলায় জেলায় চালু হবে এই প্রকল্প। নিজস্ব চিত্র।

রাস্তার খাবর কতটা ভাল? খাদ্যগুণ কতটা আর ভেজাল কতটা? এ নিয়ে খোঁজ নিতে রাজ্যের পথে নামছে কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত সংস্থা ‘ফুড স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড সেফটি অথরিটি অব ইন্ডিয়া’ (এফএসএসএআই)। এর আগে রাজ্যের সব খাদ্যদ্রব্য বিক্রেতার রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করতে উদ্যোগী হয়েছে সংস্থা। হকারদেরও সেই তালিকায় রাখা হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাতে বিশেষ সাড়া মেলেনি। এ বার কেন্দ্রের নির্দেশে রাজ্যের জেলায় জেলায় আসছে চলমান পরীক্ষাগার। ‘ফুড সেফটি অন হুইলস’ নামের এই প্রকল্পে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় চলে এসেছে গাড়ি। যে গাড়ির ভিতরে সঙ্গে সঙ্গে খাবারের গুণমান পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। জানা গিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের অধীনে থাকা এফএসএসএআই বিভাগ পুরভোট পর্ব মিটলেই ওই গাড়ি নিয়ে জেলায় জেলায় হাটেবাজারে ঘুরতে শুরু করবে। কোনও কোনও খাবারের যেমন তাৎক্ষণিক পরীক্ষা হবে তেমনই কিছু ক্ষেত্রে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে। এর পরে ভেজাল প্রমাণে বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে এফএসএসএআই।

Advertisement

খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ২০১১ সালে দেশের সব রাজ্যের আইনকে এক ছাতার তলায় আনে কেন্দ্র। এফএসএসএআই-এর অধীনে গোটা দেশে খাদ্য সুরক্ষা আইন কার্যকর হয়। সেই কেন্দ্রীয় আইন রাজ্যে রাজ্যে স্বাস্থ্য দফতর কার্যকর করে। এই আইন অনুযায়ী যে কোনও খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করলেই সংশ্লিষ্ট বিক্রেতার ফুড রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। এর জন্য বার্ষিক ১০০ টাকা করে দিতে হয় ছোট বিক্রেতাদের। আর বার্ষিক ব্যবসা ১২ লাখ টাকা বা তার বেশি হলেই ফুড লাইসেন্স বাধ্যতামূলক। দু’হাজার টাকা থেকে শুরু হয় ফুড লাইসেন্সের জন্য বার্ষিক খরচ। কোন দ্রব্য বিক্রি করা হচ্ছে তার উপরে নির্ভর করে কত টাকা হবে লাইসেন্স ফি।

পশ্চিমবঙ্গে এই আইন কার্যকরের জন্য বছর কয়েক আগেই উদ্যোগী হয় সরকার। রাজ্যের সর্বত্র সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফুড সেফটি অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে এই নিয়ম কার্যকর করতে কিছুটা শিথিলতা দেখানো হলেও এখন জোর কদমে পথে নামছেন দফতরের কর্মীরা। দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এখন রাজ্য-সহ গোটা দেশে যে আইন রয়েছে তাতে বেবি ফুড থেকে ফুচকা— সবই খাদ্য সুরক্ষা শাখার অধীনে। ছোট ব্যবসায়ী, এমনকি, রাস্তার পাশে বসা অস্থায়ী দোকানদার থেকে হকার খাদ্যসামগ্রীর ব্যবসা করলেই এফএসএসএআই রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। বড় অঙ্কের ব্যবসা হলে ফুড লাইসেন্স থাকাও বাধ্যতামূলক।’’ ওই কর্তা আরও জানান, আইন অনুসারে নিয়ম ভঙ্গ করলে ছোট ব্যবসায়ীদের ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। আর বছরে ব্যবসা ১২ লাখ টাকার বেশি হওয়া সত্ত্বেও যাঁরা ফুড লাইসেন্স করাবেন না তাঁদের ছ’মাসের কারাবাস অথবা পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা দুটোই হতে পারে।

Advertisement

ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় থাকা রাজ্য সরকার পরিচালিত হাসপাতালগুলিকে কেন্দ্র করে চলছে ব্যবসায়ীদের রেজিস্ট্রেশন ও ফুড লাইসেন্স করা নিশ্চিত করার কাজ। সেই সঙ্গে এ বার শহরে বা গ্রামে চলবে তাৎক্ষণিক খাবার পরীক্ষা। এই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা সংস্থার এক খাদ্য নিরাপত্তা আধিকারিক বলেন, ‘‘ফুড সেফটি অন হুইলস শুধু খাবারের গুণমান পরীক্ষার কাজই করবে না। সেই সঙ্গে গ্রামেগঞ্জে গিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কাজও করবে। যেখানে যেখানে অনেক মানুষের জমায়েত হয়, স্কুল-কলেজের সামনে গিয়ে মানুষের সঙ্গে খাদ্য সুরক্ষা নিয়ে কথা বলা হবে।’’

দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে ভেজাল রয়েছে কি না তা দেখার জন্য যেমন ফুচকার জলকে বাছা হবে তেমনই সেই তালিকায় থাকবে দুধ, ঘি, তেলও। সেই সঙ্গে মিষ্টি, নিমকি, তেলেভাজারও তাৎক্ষণিক পরীক্ষা হবে। সেই সঙ্গে যে সব সন্দেহজনক খাবারের তাৎক্ষণিক পরীক্ষা সম্ভব নয় সেগুলির ক্ষেত্রে নমুনা সংগ্রহ করে সরকারি বড় পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে। রাজ্যের বেশির ভাগ জেলায় কেন্দ্রের পাঠানো চলমান পরীক্ষাগার এসে গেলেও এখনই তা চালু না করে পুরভোট পর্ব মেটার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, এই প্রক্রিয়া চালানোর জন্য পুলিশ, প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাহায্যও দরকার হতে পারে। সেই কারণেই ভোট পর্ব মেটার অপেক্ষায় থাকা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement