Ration Distribution Case

আদালতেই অসুস্থ ধৃত বালু বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি, ছাড়া পেলেই ১০ দিনের ইডি হেফাজত শুরু

আদালতে শুনানির সময় আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন মন্ত্রী। তাঁকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষার পরে তাঁকে ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৩ ০১:২৭
Share:

হাসপাতালের পথে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —নিজস্ব চিত্র।

প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে টানা তল্লাশি। সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ। তার পর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয় রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। শুক্রবার দুপুরে আদালতে তাঁকে হাজির করে ইডি। রেশন দুর্নীতির তদন্তে মন্ত্রীকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় তারা। মন্ত্রী জানান, তিনি অসুস্থ। ডায়াবেটিসের রোগী। তাঁর খাবার আলাদা। দৈনিক অনেক কিছু মেনে চলতে হয়। তা ছাড়া, ইডি যে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পায়নি সে কথাও আদালতে জানান মন্ত্রী। ইডিও পাল্টা যুক্তি দেয়। তবে দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন মন্ত্রী। পরে তাঁকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই মন্ত্রীর শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা করে ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করে পরে জানানো হয়, জ্যোতিপ্রিয়ের সুগারের সমস্যা বেড়েছে। মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব এবং শারীরিক দুর্বলতা রয়েছে। পরীক্ষা করে শারীরিক অন্যান্য জটিলতাও ধরা পড়েছে। আপাতত তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার। তাই তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছে হাসপাতালে। আদালতের নির্দেশ, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ১০ দিন তাঁকে নিজেদের হেফাজতে পাবে ইডি।

Advertisement

কোর্ট রুমে নাটকীয় পরিস্থিতি

রেশন দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া জ্যোতিপ্রিয়ের শুনানি চলছিল তখন আদালতে। তাঁকে হেফাজতে নেওয়া কেন জরুরি, আদালতকে সে কথাই জানাচ্ছিল ইডি। সেই সময় উত্তেজিত মন্ত্রী তাঁর বসার আসনটি ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছিলেন। আচমকাই দেখা গেল তিনি টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যাচ্ছেন। কোনও রকমে বসে পড়লেন পাশে রাখা চেয়ারটিতে। কোর্ট রুমের অন্য প্রান্তে তখন দাঁড়িয়েছিলেন মন্ত্রী-কন্যা। তিনি প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন বাবার কাছে। অনেকেই চিৎকার করে ‘অ্যাম্বুল্যান্স’ ডাকার কথা বলেন। মুহূর্তে বদলে যায় আদালত কক্ষের পরিস্থিতি। অসুস্থ হয়ে চেয়ারে লুটিয়ে পড়া মন্ত্রীকে পুলিশ চেয়ারে বসা অবস্থাতেই বাইরে নিয়ে আসে। সেখানে তাঁকে একটি বেঞ্চে বসানো হয়। মন্ত্রী-কন্যাকে দেখা যায় বাবার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে। দ্রুত অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করেন মন্ত্রী-কন্যা প্রিয়দর্শিনী মল্লিক। ইতিমধ্যে জ্যোতিপ্রিয়কে দেখা যায় বমি করতে। মন্ত্রীর পাশে এসে তাঁর মাথায় হাত বুলিয়ে দেন তাঁর দাদা। তত ক্ষণে আদালতে ইডির বিরুদ্ধে স্লোগান উঠতে শুরু করেছে। মন্ত্রীর অসুস্থতার জন্য ইডিকে দায়ী করে ‘শেম অন ইডি’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন অনেকে। অসুস্থ মন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় বিচারকের বাতানুকুল ঘরে। আদালত চত্বরে ডাকা হয় অ্যাম্বুল্যান্স। মন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আনা হয় স্ট্রেচারও।

Advertisement

বালুর ইডি হেফাজত

শুনানি মাঝপথেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আবার তা শুরু হলে বিচারক জানিয়ে দেন, আগামী ৬ নভেম্বর পর্যন্ত ইডি হেফাজতে রাখতে হবে জ্যোতিপ্রিয়কে। অন্য দিকে, মন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য তাঁর পছন্দের হাসপাতালে যাওয়ার আবেদনও মঞ্জুর করেন বিচারক। কিন্তু ইডি তা নিয়েই আপত্তি তোলে। যুক্তি দেয়, হাসপাতালে থাকলে ইডি হেফাজতের সময়সীমায় টান পড়বে। ইডির কথা মেনেই আদালত জানিয়ে দেয়, হাসপাতাল থেকে ফেরার পর মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের ১০ দিনের ইডি হেফাজত শুরু হবে। তবে একই সঙ্গে আদালত ইডিকে বলে সুস্থ না হলে মন্ত্রীকে ইডি কমান্ড হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারবে না। পারবে না হেফাজতে নিতেও। আপাতত তাঁর চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করবে মল্লিক পরিবার।

ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি

জ্যোতিপ্রিয়কে নিয়ে এর পরে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হয় অ্যাম্বুল্যান্স। ইতিমধ্যে কোর্ট চত্বরে দ্বিতীয় বার অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাঁর জন্য আসা কলকাতা পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্সও বাতিল করা হয়। অন্য একটি অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে এনে বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় জ্যোতিপ্রিয়কে। সেখানেই মন্ত্রীর শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা করে তাঁকে হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করে জানানো হয়, জ্যোতিপ্রিয়ের সুগারের সমস্যা বেড়েছে। মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, শারীরিক দুর্বলতা রয়েছে। পরীক্ষা করে শারীরিক অন্যান্য জটিলতাও ধরা পড়েছে।

তল্লাশি ও গ্রেফতার

বৃহস্পতিবার রাত ২টো ৪০ মিনিট নাগাদ সল্টলেকের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়কে। তার আগে টানা ২০ ঘণ্টা ধরে ইডি তল্লাশি চালায় তাঁর বাড়িতে। রেশন বণ্টন দুর্নীতির অভিযোগে ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানকে তার আগেই গ্রেফতার করেছিল ইডি। তার পরেই রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের নাম প্রকাশ্যে আসে। বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৭টা নাগাদ মন্ত্রীর সল্টলেকের দু’টি বাড়িতে তল্লাশি শুরু করে ইডির দু’টি দল। তার পর একে একে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় ওরফে বালুর আপ্তসহায়ক অমিত দে-র ফ্ল্যাটে পৌঁছে যায় ইডি। পৌঁছে যায় আপ্ত সহায়কের বন্ধু রনি দে-র বাড়িতেও। তবে এখানেই ইডির তল্লাশি অভিযান থামেনি। হাওড়ায় মন্ত্রীর এক ঘনিষ্ঠের বাড়িতে এমনকি, বেনিয়াটোলা লেনে বালুর পৈতৃক ভিটেতেও দীর্ঘ ক্ষণ তল্লাশি চালানো হয়। রাত বাড়লে একটা সময় দেখা যায়, মন্ত্রীর সল্টলেকের বাড়ির বাইরে বাড়ছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রহরা। এর পর রাত ২টে ৪০ মিনিট নাগাদ গ্রেফতার করা হয় বালুকে।

‘গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হলাম’

বৃহস্পতিবার রাতেই সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বালুকে। সেখানে যাওয়ার পথে মন্ত্রী দাবি করেন, তিনি চক্রান্তের শিকার। কিসের চক্রান্ত? কাদের চক্রান্ত? ইডির গাড়িতে উঠতে উঠতে বিধ্বস্ত জ্যোতিপ্রিয়ের জবাব, ‘‘গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হলাম আমি। শুধু এটুকুই বলে গেলাম। ভারতীয় জনতা পার্টি খুব ভাল কাজ করেছে। তারা আমাকে শিকার করলেন।’’ পরে সকাল সাড়ে ৮টায় সিজিও কমপ্লেক্স থেকে তাঁকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সময় ‘চক্রান্তকারী’র নামও জানান জ্যোতিপ্রিয়। মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছে। বিজেপি এবং শুভেন্দু অধিকারী চক্রান্তে জড়িত।’’

আদালতে বালুর হাজিরা

শুক্রবার দুপুর সওয়া ১টা নাগাদ হাসপাতাল থেকে সরাসরি আদালতে নিয়ে আসা হয় মন্ত্রীকে। বিবাদী বাগের ব্যাঙ্কশাল কোর্টে ছিল জ্যোতিপ্রিয়ের মামলার শুনানি। ইডির গাড়ি থেকে নামিয়ে রাজ্যের বনমন্ত্রীকে সোজা নিয়ে আসা হয় আদালতের লকআপে। সেখানে ঢোকার মুখেও মন্ত্রী আবার বলেন চক্রান্তের কথা। দুপুর ৩টে নাগাদ শুনানি শুরুর কিছু পরে আদালতে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন মন্ত্রী। আদালতের রায় শোনার আগেই তাঁকে নিয়ে হাসপাতালে রওনা হয় অ্যাম্বুল্যান্স।

সুকান্ত-সুজন-অধীর

মন্ত্রীর গ্রেফতার নিয়ে ময়দানে হাজির বিরোধী দলের নেতারা। প্রধান বিরোধী দল বিজেপি আক্রমণ শানিয়েছে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, তৃণমূলকে আক্রমণ করেছে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র দুই শরিক দল সিপিএম এবং কংগ্রেস। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতার তো সময়ের অপেক্ষা ছিল। যে সম্পত্তি বাকিবুরের পাওয়া গিয়েছে তার উৎস কী? যে পরিমাণ সম্পত্তি পাওয়া গিয়েছে তাকে সম্পত্তির বদলে রাজত্ব বলা ভাল। সেই রাজত্ব আসলে কার? এর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আমরা আগেও জ্যোতিপ্রিয়ের বিরুদ্ধে চাল চুরির অভিযোগ পেয়েছি।’’ সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানতেন জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতার হবে। কারণ, দিল্লির সব খবর তিনি পান।’’ একই সঙ্গে সুজনের প্রশ্ন, ‘‘অতীতে মমতা কলকাতা পুলিশের কমিশনার রাজীব কুমারের পক্ষ নিয়ে রাস্তায় ধর্না দিলেও জ্যোতিপ্রিয়ের জন্য কেন সিজিও কমপ্লেক্স ঘেরাও করলেন না?’’ কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী আবার বলেন, ‘‘শিক্ষার দুর্নীতির চেয়ে রেশন দুর্নীতি অনেক অনেক বড় মাপের। সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে পরিকল্পিত ভাবে লুট হয়েছে। সাধারণ মানুষের পেটের ভাত কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতে শিশুদের বরাদ্দ খাবার চুরি করে বাজারে বিক্রি করা হয়েছে।’’

বাকিবুর-বালু ‘পারিবারিক’ যোগ

ইডি সূত্রে জানা যায়, রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানের সঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ‘পারিবারিক সম্পর্ক’-এর প্রমাণ পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ওই সূত্রের দাবি, দুই পরিবারের সদস্যেরা একযোগে একাধিক সংস্থা চালাতেন বলে প্রমাণ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা এ-ও জেনেছেন যে, ওই সব সংস্থা বিভিন্ন ভুয়ো সংস্থায় কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগও করত! ইডির ওই সূত্রের দাবি, আপাতত এ রকম তিন সংস্থার খোঁজ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। ওই তিন সংস্থা হল ‘শ্রী হনুমান রিয়েলকন প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘গ্রেসিয়াস ইনোভেটিভ প্রাইভেট লিমিটেড’ এবং ‘গ্রেসিয়াস ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেড’। এই তিন সংস্থার ডিরেক্টর পদে এক সময়ে নাম ছিল মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের স্ত্রী মণিদীপা মল্লিক এবং কন্যা প্রিয়দর্শিনী মল্লিকের। আবার ওই সংস্থার সঙ্গেই জড়িত ছিলেন বাকিবুরের পরিবারের সদস্যরাও। ওই সমস্ত সংস্থার অ্যাকাউন্টে নিয়মিত বাকিবুরের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকার লেনদেন হত বলেও ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। এ-ও জানা গিয়েছে যে, ২০২২ সালে ওই কোম্পানির সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করার পর বিক্রির ২০ কোটির বেশি টাকা পাঠানো হয়েছিল বাকিবুরের শ্যালকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। শুক্রবার আদালতে ইডি জানিয়েছে, ওই সংস্থাগুলির স্ট্যাম্পও তারা খুঁজে পেয়েছে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে। ইডি প্রশ্ন তুলেছে যদি যোগ না-ই থাকবে তবে কোম্পানির স্ট্যাম্প বাড়িতে এল কোথা থেকে!

আটা চুরির দুর্নীতি

রেশন দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করতে এসে রাজ্যের ‘মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ী বাকিবুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেছিলেন ইডির তদন্তকারীরা। পরে তাঁর কাছ থেকে নদিয়ার আটা এবং চালকল মেসার্স এনপিজি রাইস মিল প্রাইভেট লিমিটেডের খোঁজ মেলে। ইডি জানতে পারে, ওই চাল এবং আটাকল সংস্থার ডিরেক্টর বাকিবুরই। এর পরে ওই সংস্থার ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে দুর্নীতির রকমফের জানতে পারে ইডি। শুক্রবার আদালতে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রসঙ্গে ওই চালকলের প্রসঙ্গ টেনে আনে ইডি। তারা বলে, প্রতি ১ কেজি আটার দামে অন্তত ২০০ গ্রাম আটা কম দিতেন কলমালিকেরা। কমিয়ে নেওয়া আটার পরিমাণ কখনও কখনও ৪০০ গ্রামও হত। আর পুরোটাই চলত মিলমালিক এবং সরকারি সরবরাহকারীদের বোঝাপড়ায়। এ ভাবে আটা সরিয়ে, তা বাজারজাত করে যে অর্থ আসত, সেই ‘লাভের’ টাকা ৮০:২০ অনুপাতে ভাগ হত সরবরাহকারী এবং মিলমালিকদের মধ্যে। বাকিবুর ইডিকে জানিয়েছেন, তাঁর মতো মিলমালিকেরা পেতেন ওই অর্থের ২০ শতাংশ। আর সিংহভাগ অর্থাৎ ৮০ শতাংশ লাভ যেত রেশন সরবরাহকারী এবং এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত অন্য মধ্যস্থতাকারীদের ভাঁড়ারে।

বালুর সম্পত্তির খতিয়ান

ইডি আদালতে জানায়, বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত এলাকার ঠিকানায় দু’টি সংস্থার নাম নথিভুক্ত আছে। তাদের দাবি, চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, ওই সংস্থাগুলিতে রয়েছে কোটি কোটি টাকা। এর পরেই অবশ্য অসুস্থ হয়ে পড়েন মন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement