জেএনইউয়ে হামলার প্রতিবাদে মিছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের। রবিবার রাতে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ও শিক্ষিকাদের উপরে হামলার তীব্র নিন্দা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিন্দা করেছে সিপিএম, সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-ও। রবিবার রাতেই এই ঘটনার প্রতিবাদে বিবৃতি দিয়েছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যান্ডের কাছে প্রতিবাদ মিছিল করেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। আজ, সোমবার বেলা ২টোয় ফের মিছিলের ডাক দিয়েছেন ওই ছাত্রছাত্রীরা।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর টুইটারে লিখেছেন, ‘‘কোনও শব্দ দিয়েই এই ঘটনার ব্যাখ্যা করা যায় না। এটা গণতন্ত্রের লজ্জা।’’ জেএনইউ ও শাহিনবাগ, দুই আন্দোলনেরই পাশে দাঁড়াতে তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীর নেতৃত্বে এক দল প্রতিনিধি দিল্লি যাচ্ছেন।
এই হামলার তীব্র নিন্দা করে সিপিএম বলেছে, প্রশাসনের সাহায্যে হামলা চালিয়েছে এবিভিপি-র গুন্ডারা। হামলায় জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ গুরুতর আহত হয়েছেন। শিক্ষক ও পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ানোর কথাও জানিয়েছে সিপিএম। হামলার নিন্দা করে সিপিআইএমএল (লিবারেশন) বলেছে, ‘‘এর দায় নিয়ে অবিলম্বে জেএনইউয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ চাই।’’ হামলার প্রতিবাদে আজ, সোমবার রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ দিবস পালনের ডাক দিয়েছে এসএফআই।
আরও পড়ুন: বর্ধমান কাণ্ডে মৃত্যু আহতের
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন (জুটা)-এর সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের প্রশ্ন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা-প্রাঙ্গণে এমন ঘটনা ঘটার পরে সভ্য দেশে বাস করছি, এই দাবি কী ভাবে করব?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পুলিশের উপস্থিতিতে যে-ভাবে রড, লাঠি নিয়ে হামলা হয়েছে, তাতে আমরা স্তম্ভিত। এই গুন্ডারা একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সমর্থক বলেই জানতে পেরেছি। সরকারের সাহায্য নিয়ে জেএনইউ-কর্তৃপক্ষের এই রক্তপাত বন্ধ করা উচিত।’’
বহিরাগতেরা হামলা চালানো সত্ত্বেও পুলিশ যে-ভাবে ‘নিষ্ক্রিয়’ ছিল, তার নিন্দা করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন (কুটা)-এর সাধারণ সম্পাদক পার্থিব বসু। তিনি বলেছেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় এবং গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ দাবিয়ে রাখতে এটা পরিকল্পিত হামলার অংশ। আমাদের ভয়, বিরোধী কণ্ঠ চুপ করাতে এমন হামলা আরও হবে। এই ঘটনায় অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
আরও পড়ুন: ৮০০ টাকার জন্য বন্ধুকে খুন, ধৃত দুই তরুণ
হামলার নিন্দা করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন অল বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গৌতম মাইতি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং ছাত্রছাত্রী। কমন অ্যাডমিশন টেস্ট (ক্যাট)-এ শীর্ষ স্থানাধিকারী যাদবপুরের পডুয়া দেবর্ষি চন্দ্রও ফাসিস্ত শক্তির বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই দাবি তুলে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘প্রতিবাদ করার জন্য ওরা পড়ুয়াদের মারছে। কাউকে পছন্দ না-হলেই ওরা গণপিটুনি দেবে।’’
এবিভিপি-র পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ সম্পাদক সপ্তর্ষি সরকারের বক্তব্য, জেএনইউয়ে বাম পড়ুয়াদের হামলায় তাঁদের ২৫ জন জখম হয়েছেন। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা।