প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার এক, অভিযুক্ত মুকুলও

পুলিশ জানায়, সন্তুর অভিযোগ, ২০১৫ সালে নিজাম প্যালেসে বাবান ঘোষের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৯ ০২:১৯
Share:

ধৃত: আলিপুর আদালতে বাবান ঘোষ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

রেলে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ আগেই দায়ের হয়েছে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে। এ বার রেলের একটি কমিটির সদস্যপদ পাইয়ে দেওয়ার নামে ৭০ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগও উঠল তাঁর বিরুদ্ধে। তার জেরে বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছেন মুকুলবাবু।

Advertisement

সরশুনা থানা এলাকার বাসিন্দা সন্তু গঙ্গোপাধ্যায় নামে এক যুবক গত জানুয়ারি মাসে মুকুলবাবু-সহ চার জনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। তার জেরে মঙ্গলবার রাতে পাটুলি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের নেতা বাবান ঘোষকে। তাঁর বিরুদ্ধে সরশুনা থানার পুলিশ প্রতারণা, হুমকি-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাঁর মোবাইল ফোন। পুলিশ জানায়,

ওই মামলার এফআইআরে মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম রয়েছে মুকুলবাবুর। বাবান ছাড়া বাকি দুই অভিযুক্তের নাম রাহুল সাউ এবং সাদ্দাম আনসারি।

Advertisement

পুলিশ জানায়, সন্তুর অভিযোগ, ২০১৫ সালে নিজাম প্যালেসে বাবান ঘোষের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। পরবর্তী কালে তাঁকে রেলের স্থায়ী একটি কমিটিতে স্থায়ী সদস্যপদ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন বাবান। মৌখিক চুক্তি মতো ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে কয়েক দফায় তিনি প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা নেন।

তদন্তকারীরা জানান, ২০১৫ সালে সুরেশ প্রভু রেলমন্ত্রী থাকাকালীন সন্তুকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মন্ত্রীর আপ্ত সহায়ক পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ করানো হয় সন্তুর। অভিযোগকারীর দাবি, রেলমন্ত্রীর সই করা কিছু নথিও তাঁকে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানায়, বাবানের সঙ্গে মধ্য কলকাতার একটি জায়গায় নগদ টাকার লেনদেন হয়। কিছু টাকার লেনদেন হয় অনলাইনেও। সন্তুর দাবি, দিল্লিতে মুকুলবাবুর সঙ্গে তাঁর আলাপ করান বাবান। তদন্তকারীরা জানান, তদন্তের প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে মুকুলবাবুকে। এ দিন

বাবানকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁকে ২৮ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। তবে একই সঙ্গে বিচারকের নির্দেশ, অভিযুক্তের জেরার ভিডিওগ্রাফি করতে হবে। আদালতে যাওয়ার সময় বাবান দাবি করেন, গোটা ঘটনা সাজানো। এ দিন আদালত থেকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার সময় বিজেপি সমর্থকেরা বেশ কিছু ক্ষণ পুলিশের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান।

মুকুলবাবুর আইনজীবী শুভাশিস দাশগুপ্ত জানান, হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে বলা হয়েছে, ওই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার সরাসরি কোনও অভিযোগ নেই। যদি ধরেও নেওয়া হয় ২০১৫ সালে প্রতারণা হয়েছে, তা হলে ২০১৯ সালে এফআইআর দায়ের হল কেন? রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশতই অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

পরে মুকুলবাবুও বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে ২৯টি মামলা হয়েছে। তার অনেকগুলিতেই অভিযোগকারীরা হলফনামা দিয়ে বলেছেন, তাঁদের দিয়ে জোর করে আমার বিরুদ্ধে মামলা করানো হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয় পেয়েছেন। কারণ তাঁর সরকার থাকবে না। তাই এমন অনেক অভিযোগই এখন হবে।

এতে আমরা চিন্তিত নই।’’ আর বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘বিজেপির বিরুদ্ধে রাজ্যে ২৮ হাজার অভিযোগ হয়েছে। আমাদের প্রায় ৫০০ কর্মী জেলে। কিন্তু পুলিশ দিয়ে বিজেপির অগ্রগতি ঠেকানো যাবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement