গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
রাজভবনের সঙ্গে বিধানসভার বিবাদ যেন কিছুতেই মিটতে চাইছে না। সংঘাতের আবহেই সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন। প্রথম দিনেই নবনির্বাচিত বিধায়কদের শপথগ্রহণ করানোর বিষয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে বলেই বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে খবর। ১৩ জুলাই উপনির্বাচনের ফলাফলে চার আসনেই জয় পেয়েছে তৃণমূল। সেই বিধায়কদের শপথগ্রহণ করাতে রাজভবনের চিঠি পাঠিয়েছিল বিধানসভার সচিবালয়। কিন্তু বিধানসভার চিঠির জবাবে রাজভবন যে চিঠিটি বিধানসভার সচিবালয়কে পাঠিয়েছে, তাতে শপথগ্রহণ সংক্রান্ত কোনও দায়দায়িত্বে কথার বদল, দুটি প্রশ্নের জবাব জানতে চেয়েছে।
রাজভবন বিধানসভার কাছে জানতে চেয়েছে, গত উপনির্বাচনে জয়ী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রেয়াত হোসেন সরকারের শপথবাক্য পাঠ করানোর জন্য রাজ্যপাল বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিজের প্রতিনিধি হিসাবে নিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে রাজ্যপাল জানতে পেরেছেন, সায়ন্তিকা এবং রেয়াতকে শপথগ্রহণ করিয়েছেন স্পিকার বিমান। বিধানসভাকে দেওয়া চিঠিতে রাজভবনের প্রশ্ন, ওই খবর কি সত্যি?
রাজভবনের দ্বিতীয় প্রশ্নটি বিধানসভার অধিবেশন সংক্রান্ত বিষয়ে। রাজ্যপাল জানতে চেয়েছেন, বিধানসভার অধিবেশন ‘মুলতবি’ না করে বার বার ‘স্থগিত’ করা হচ্ছে কেন? সাধারণত বিধানসভার অধিবেশন মুলতবি হওয়ার পর আবার অধিবেশন ডাকার জন্য রাজভবন থেকে ‘নোটিফিকেশন’ করাতে হয়। কিন্তু অধিবেশন স্থগিত রাখা হলে তা যে কোনও সময় আবার চালু করা যায়। তার জন্য রাজভবনের অনুমোদনের প্রয়োজন পড়ে না। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে বিধানসভার অধিবেশন ‘স্থগিত’ রাখা হয়েছিল। পরে সায়ন্তিকাদের শপথগ্রহণ করানোর জন্যও এক দিনের জন্য অধিবেশন ডেকে আবার তা ‘স্থগিত’ করে দেওয়া হয়েছিল।
এই দুই বিষয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যপালের চিঠির পরে অনেকেই মনে করছেন, বিধানসভা উপনির্বাচনের চার জয়ী প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী, কৃষ্ণ কল্যাণী, মধুপর্ণা ঠাকুর এবং সুপ্তি পাণ্ডের শপথগ্রহণকে কেন্দ্র করে নতুন জটিলতা তৈরি হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, নবনির্বাচিত চার বিধায়ককেই সোমবার বিধানসভায় আসতে বলা হয়েছে। তাই মনে করা হচ্ছে, অধিবেশনের প্রথম দিনই শপথগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতা ঘিরে কোনও পদক্ষেপ নিতেই পারেন স্পিকার।