প্রতীকী ছবি।
কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের আসন-রফার আনুষ্ঠানিক আলোচনা এখনও শুরু হয়নি। তাঁরা যে বামেদের সঙ্গে জোট বেঁধেই রাজ্যে বিধানসভা ভোটে লড়তে চান, এক সুরেই সে কথা রাহুল গাঁধীকে জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা। এরই মধ্যে আসন ভাগ নিয়ে ‘চাপ’ রাখতে আসরে নেমে পড়ল বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। সিপিএমের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসে ফ ব নেতৃত্বের দাবি, আসন ছাড়ার প্রশ্নে তাঁদের মতো শরিক দলের ‘সম্মান’ রেখেই জোট করতে হবে। সিপিএম নেতৃত্ব বিষয়টি মাথায় রাখার আশ্বাস দিয়েছেন।
চার বাম দলের নেতাদের সঙ্গে সর্বশেষ বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছিলেন, আসন ভাগাভাগি নিয়ে বামফ্রন্টের তরফে তাঁরা সিপিএমের সঙ্গেই কথা বলতে চান। শরিকদের সঙ্গে নয়। দলের অন্দরেও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেছেন, পাঁচ বছর আগে নানা জেলার আসন নিয়ে শরিক দলগুলির দাবি-দাওয়া সামাল দিতে বিভিন্ন দলের সঙ্গে কথা বলতে হয়েছিল, ‘জটিলতা’ও হয়েছিল বিস্তর। তার পরেও বেশ কিছু আসনে কংগ্রেস ও শরিক দলের একই সঙ্গে প্রার্থী ছিল। এ বার সিপিএম বরং বামেদের তরফে আসনের ভাগ বুঝে নিয়ে শরিক ও অন্য সহযোগী দলকে বণ্টন করুক, এমনই মনোভাব অধীরবাবুদের। এর প্রেক্ষিতেই বেঁকে বসেছে ফ ব। সিপিএমের সঙ্গে আলাদা আলোচনায় বসে ফ ব-র নরেন চট্টোপাধ্যায়, হাফিজ আলম সৈরানিরা বলেছেন, কংগ্রেসের এই মনোভাব তাঁদের জন্য ‘অসম্মানজনক’। কংগ্রেসের দাবি মানতে গিয়ে সিপিএম দীর্ঘ দিনের শরিকদের ‘জলাঞ্জলি’ দেবে কি না, তা তারা স্পষ্ট করে জানাক। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু অবশ্য নরেনবাবুদের আশ্বাস দিয়েছেন, ফ্রন্টের বাইরে গিয়ে কোনও সমঝোতার কথা তাঁরা ভাবছেন না।
সিপিএমের সামনে অবশ্য এখন উভয় সঙ্কট! বামেদের তরফে মোট আসনের হিসেব বুঝে নিয়ে সিপিএম যদি তা শরিক ও সহযোগীদের মধ্যে ভাগ করে দেয়, তাতে বিশেষ ‘অবাস্তব’ কিছু দেখছে না আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের একাংশ। কিন্তু শরিকদের কথা একেবারে ফেলেও দিতে পারছেন না বিমানবাবুরা। এই মুহূর্তে ফ ব-র দুই, আরএসপি-র দুই এবং সিপিআইয়ের হাতে এক জন বিধায়ক রয়েছেন। ফ্রন্টের এক বর্ষীয়ান নেতার মতে, ‘‘একক শক্তিতে জেতার মতো পরিস্থিতি এখন প্রায় কারওরই নেই। আসন নিয়ে জেদাজেদি করতে গিয়ে জোট ভেস্তে গেলে আরও বড় ক্ষতি হবে সকলেরই।’’