নিরাপদ সর্দার। — ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালির অশান্তিতে প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তুলে জামিনে তাঁকে মুক্তি দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। বসিরহাট জেল থেকে মুক্ত হয়ে নিরাপদ ওই সংশোধনাগারের সুপারকে চিঠি লিখেছেন। জানিয়েছেন, বন্দিদশায় তাঁর অভিজ্ঞতা ‘মন্দ’ নয়। কিছু ‘পরামর্শ’ও দিয়েছেন চিঠিতে। নিরাপদর কথায়, “জেলে থাকাকালীন যা দেখেছি, নাগরিক হিসেবে তা কারা দফতরকে জানানো আমার কর্তব্য। তাই কিছু পরামর্শ দিয়েছি।”
নিরাপদ বলছেন, “বাম জমানায় জেলকে সংশোধনাগারে পরিণত করা হয়েছিল। কিন্তু সংশোধন করার মতো সামাজিক দিকগুলি তুলে ধরার ব্যবস্থা আজও গড়ে ওঠেনি। কারামুক্তির পরে মানুষের ভাল কাজের দৃষ্টান্ত বন্দিদের মধ্যে তুলে ধরার ব্যবস্থা করলে ভাল হয়। তা হলে বন্দিদের মধ্যে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্পৃহা তৈরি হবে। এ নিয়ে ছোট-ছোট ফিল্ম দেখাতে পারলেও ভাল হয়।”
চিঠিতে সংশোধনাগার সম্পর্কে বন্দিদের সম্যক ধারণা গড়ে তুলতে নিয়মকানুন দরজায় বা দেওয়ালে সেঁটে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন নিরাপদ। লিখেছেন যে, বন্দিদশা কাটিয়ে মূল স্রোতে ফিরে যাঁরা প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন তাঁদের তথ্য সংগ্রহ করা জরুরি। একইসঙ্গে বন্দিদের জন্য জেলে যে ব্যবস্থা আছে, তারও অকপট প্রশংসা করেছেন নিরাপদ। তিনি বলেন, “চিঠিতে লিখেছি, জেলখানার ভিতরে পরিবেশ খুবই সুন্দর, পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন। শৌচাগারগুলি সাফসুতরো। বন্দিদের থাকার ঘরগুলিও পরিষ্কার। কর্মীদের আচরণ ভাল লেগেছে। বন্দিদের মধ্যে বাছাই করে দক্ষতা ও যোগ্যতার বিচারে কাজের বণ্টনও খুব সুন্দর। রান্না বা খাবার নিয়ে প্রশ্ন ওঠে না। বিকেল ক্যারম ও ক্রিকেট খেলার আয়োজন বন্দিদের আনন্দ দেয়।”
প্রাক্তন বাম বিধায়কের চিঠি সম্পর্কে কারামন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, “ওঁর চিঠির কথা আমার জানা নেই। উনি আমাদের দলের বিরোধী। কিন্তু সংশোধনাগার ও বন্দিদের স্বার্থে ভাল প্রস্তাব বা পরামর্শ দিলে অবশ্যই গ্রহণ করা হবে। আমি বিষয়টি নিয়ে দফতরে আলোচনা করব।”