সোম-মঙ্গল রাজ্যে দু’দিন কর্মবিরতির ডাক। ফাইল চিত্র।
মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) দেওয়ার দাবিতে বেশ কয়েক দিন ধরেই আন্দোলন করে চলেছেন সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ। এ বারের রাজ্য বাজেট পেশের একেবারে শেষ লগ্নে এসে সরকারি কর্মীদের ৩ শতাংশ ডিএ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। কিন্তু এই সামান্য ডিএ বৃদ্ধিতে সন্তুষ্ট নন মঞ্চের সদস্যেরা। তাঁরা বিষয়টিকে ‘ভিক্ষার দান’ হিসাবেই দেখছেন। তাই কেন্দ্রীয় হারে বকেয়া ডিএ মেটানোর দাবিতে আগামী সোম এবং মঙ্গলবার রাজ্যে একটানা ৪৮ ঘণ্টা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন তাঁরা। শুক্রবার রাজ্য জুড়ে ‘ধিক্কার মিছিল’-এরও ডাক দেওয়া হয়েছে। সপ্তাহের প্রথম দুই কাজের দিনে তাই সরকারি কাজকর্ম প্রায় বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে অনেকের আশঙ্কা। ডিএ বৃদ্ধির দাবিতে সব কর্মচারী সংগঠনকেই শামিল হওয়ার ডাক দিয়েছে মঞ্চ।
রাজ্য সরকারের ঘোষণার ফলে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের মহার্ঘ ভাতার পার্থক্য কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশে। বাজেট পেশের পরেই শহিদ মিনারের সামনে অবস্থান মঞ্চ থেকে বাকি ৩৬ শতাংশ ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার দাবি জানান মঞ্চের সদস্যরা। শহিদ মিনার চত্বরেই একটি মিছিলও করেন তাঁরা। স্লোগান ওঠে ‘তিন শতাংশ ললিপপ, ঢপের চপ’। সরকারের এই ঘোষণাকে ‘অবমাননা’ হিসাবেই দেখছেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের দাবি, ডিএ ভিক্ষা নয়, তাঁদের ন্যায্য পাওনা। সরকারি কর্মচারীদের পাশে দাঁড়িয়ে এ প্রসঙ্গে শাসকদল তৃণমূলের সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলিও।
অন্য দিকে, সুপ্রিম কোর্টে এই ডিএ মামলা এখনও বিচারাধীন। আগামী ১৫ মার্চ মামলাটির পরবর্তী শুনানি। গত বছরের ৫ ডিসেম্বর মামলাটি প্রথম বার শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টে ওঠে। পরে শুনানির দিন পিছিয়ে ১৪ ডিসেম্বর করা হয়। পাশাপাশি, এই মামলা শুনানির জন্য নতুন করে ডিভিশন বেঞ্চও গঠিত হয়। সেখানে ছিলেন দুই বাঙালি বিচারপতি— বিচারপতি হৃষীকেশ রায় এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। কিন্তু ওই দিনই মামলাটি থেকে বিচারপতি দত্ত সরে দাঁড়ান। ফলে মামলার শুনানি হয়নি। জানুয়ারিতে আবার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। সেই মতো ১৬ জানুয়ারি, সোমবার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক হয়। শেষ পর্যন্ত তা-ও হয়নি। ২০২২ সালের মে মাসে কলকাতা হাই কোর্ট রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। তাদের যুক্তি, হাই কোর্টের সিদ্ধান্ত মেনে ডিএ দিতে হলে প্রায় ৪১ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা খরচ হবে। যা রাজ্য সরকারের পক্ষে বহন করা কঠিন।