—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
রেশন দুর্নীতির অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তারপর থেকেই খাদ্য দফতরের নানা বিষয় নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। সেই সব অভিযোগ থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার ধান কেনার ক্ষেত্রে আধিকারিকদের উপর নজরদারির সিদ্ধান্ত নিল খাদ্য দফতর। নতুন এই পদ্ধতিতে দফতর সরাসরি ধান কেনার ক্ষেত্রে নজরদারি করবেন দফতরের একাংশ শীর্ষ আধিকারিকেরা। খাদ্য দফতরের নিয়মে, একটি ধান ক্রয় কেন্দ্রে এক জন করে ‘পারচেস অফিসার’ থাকেন। সেই ‘পারচেস অফিসার’ই মূলত ধান কেনার সময় নজরদারি করেন খাদ্য দফতরের তরফে। আগের নিয়মে একটি ধান ক্রয় কেন্দ্রে বছরের পর বছর থেকে যেতে পারতেন একই ‘পারচেস অফিসার’। নতুন নিয়মে আর বছরের পর বছর একই জায়গায় থেকে কাজ করা যাবে না ওই আধিকারিকদের। কয়েক মাস অন্তর অন্তর তাঁদের বদলি করে দেওয়া হবে।
এক আধিকারিকের দাবি, “নতুন এই পদ্ধতিতে অনেক বেশি স্বচ্ছতা রয়েছে। এক জন আধিকারিকের ধান কেনার ক্ষেত্রে কী কী ভূমিকা রয়েছে, বিস্তারিত খতিয়ে দেখার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় যেমন ধান বিক্রি নিয়ে কৃষকদের অভিযোগের জবাব দেওয়া যাবে, তেমনি বাহ্যিক ভাবেও নতুন এই পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না।” খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, ধান কেনার ক্ষেত্রে এ বার থেকে ‘পারচেস অফিসারে’র ভূমিকাও থাকবে খাদ্য দফতরের আতশকাচের তলায়। এক মাস অন্তর অন্তর তাঁদের কাজের মূল্যায়ন করা হবে। যদি তাদের দায়িত্ব পালনে কোনও ত্রুটি খাদ্য দফতরের নজরে আসে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বদলি করে দেওয়া হবে। কোনও ‘পারচেস অফিসার’কে একটি নির্দিষ্ট ধান ক্রয় কেন্দ্রের দায়িত্বে বেশি দিন রাখা হবে না। নতুন এই পদ্ধতির মাধ্যমে ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলি নিয়ে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে চাইছে খাদ্য দফতর।
খাদ্য দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, জ্যোতিপ্রিয় জমানায় যে ভাবে খাদ্য দফতর চলত সেই পদ্ধতি বদলানো হচ্ছে। ২০১১ সাল থেকে টানা ১০ বছর খাদ্য দফতরের দায়িত্বে ছিলেন বালু। ২০২১ সালে মধ্যমগ্রামের বিধায়ক রথীন ঘোষ খাদ্য দফতরের দায়িত্বে আসার পর খাদ্য দফতরের পরিচালনার ক্ষেত্রে অল্পবিস্তর বদল আনা হয়েছিল। কিন্তু গত অক্টোবর মাসে জ্যোতিপ্রিয়কে ইডি গ্রেফতার করার পর আরও তৎপর হয়েছে খাদ্য দফতর। তাই ধীরে ধীরে বালুর জামানার খাদ্য দফতরের কাজকর্মে বদল আনা হচ্ছে। যাতে নতুন করে খাদ্য দফতরের বিরুদ্ধে আর কোনও অভিযোগ তুলতে না পারে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। তারই পদক্ষেপ হিসাবে খাদ্য দফতর থেকে সরাসরি ‘পারচেস অফিসার’দের উপর নজরদারি শুরু হয়েছে। খাদ্য দফতরের একাংশ মনে করছে, ‘পারচেস অফিসার’দের ভূমিকায় বদল এলে ধান ক্রয় নিয়ে যে সমস্ত অভিযোগ উঠছে তা অনেকটাই বন্ধ করা যাবে।