অণ্ডাল বিমানবন্দর। ছবি: সংগৃহীত
পশ্চিম বর্ধমানের অণ্ডালে কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরের সঙ্গে কলকাতার দ্রুত যোগাযোগের জন্য তৈরি করা হবে উড়ালপুল অথবা মেট্রো। শনিবার পূর্ব বর্ধমানের গলসি বিধানসভা কেন্দ্রে এক জনসভায় এমনই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, তাঁর এই মন্তব্যকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা।
এ দিন ওই সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আগামী দিনে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে তৈরি হয়ে যাবে অণ্ডাল। পরিকল্পনা রয়েছে, আমরা একটা উড়ালপুল তৈরি করে দেব, যেটা এখান থেকে শুরু হয়ে কলকাতায় গিয়ে মিশবে। যাতে অণ্ডালে নেমে দ্রুত কলকাতায় চলে যাওয়া যায়। অথবা, অণ্ডাল-কলকাতা মেট্রো পরিষেবা চালু হবে।’’
২০২০-র ৮ ডিসেম্বর পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আগামী দিনে কলকাতা বিমানবন্দরের মতোই হয়ে যাবে অণ্ডাল বিমানবন্দর। তার পরে চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি ‘ভোট অন অ্যাকাউন্টস’-এ অণ্ডালকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
তবে ওয়াকিবহাল মহলের প্রশ্ন, কলকাতা থেকে অণ্ডালগামী যাত্রীদের এবং অণ্ডালে নেমে কলকাতা বিমানবন্দরে গিয়ে অন্য উড়ান ধরতে চাওয়া যাত্রীদের জন্য দূরত্বগত ব্যবধান (প্রায় ১৮৩ কিলোমিটার) এত দ্রুত কী ভাবে মেটানো সম্ভব? ২০২০-র ১৩ ফেব্রুয়ারি দুর্গাপুরের প্রশাসনিক সভা থেকে এই প্রসঙ্গে মমতা বলেছিলেন, ‘‘অণ্ডাল থেকে কলকাতা পর্যন্ত দুরন্ত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন চালাতে পারলে সব চেয়ে ভাল হত। ফ্রেট করিডর হচ্ছে। সেই লাইন দিয়ে মনোরেল, ট্যাক্সি রেল চালুর বিষয়েও ভাবা যেতে পারে। কিন্তু কেন্দ্রের বর্তমান সরকার সে সব করবে না। কেন্দ্রে মনের মতো সরকার এলে তখন এ সব নিয়ে ভাবব।’’
এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের ঘোষণাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা। গলসি বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী বিকাশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রচারে গিয়ে দেখছি, পানীয় জলের কল নেই। দো-ফসলি জমিতে সেচের অভাবে চাষ হয় না। স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে ডাক্তার, নার্স, ওষুধ নেই। তাই উন্নয়ন ও পরিকাঠামো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এ সব গালভরা প্রতিশ্রুতি ধাপ্পাবাজি ছাড়া কিছু নয়।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, কাঁকসার বীরেশ্বর মণ্ডল বলেন, ‘‘ভোটের দিকে তাকিয়েই হয়তো এমন কথা! অণ্ডাল বিমাননগরীর জন্য জমি অধিগ্রহণ ও প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল বাম আমলে। কিন্তু এত দিন পরেও সেখানে কাজ প্রায় কিছুই এগোয়নি।’’