ফাইল চিত্র।
তালাবন্দি দেশে সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষই মহাসমস্যায় পড়েছেন। ব্যতিক্রম নন মৎস্যজীবীরাও। ভয়াবহ করোনা ব্যাধির প্রকোপে লকডাউনের ফলে সমুদ্রে মাছ ধরা ও বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাতে প্রতিদিন তাদের প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছে দিঘা ও কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী সমিতি।
পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা, কাঁথি, শঙ্করপুর, তাজপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, নামখানা, ডায়মন্ড হারবার-সহ বিভিন্ন এলাকায় অন্তত তিন লক্ষ আশি হাজার মৎস্যজীবী রয়েছেন। মূলত বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরে বিক্রি করাই যাঁদের জীবিকা। কিন্তু ২৪ মার্চ লকডাউন ঘোষণার পর থেকে কোনও মৎস্যজীবী আর সমুদ্রে যেতে পারছেন না। রুজিরোজগার বন্ধ। সমুদ্রের মাছ বিক্রি হয় দিঘা ও ডায়মন্ড হারবারের আড়তে। রোজ দিঘায় গড়ে ৪০০ টন এবং ডায়মন্ড হারবারে ১০০ টন মাছ কেনাবেচা হয়। দিঘা ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, ‘‘রোজ কাঁথি ডিভিশনের সমুদ্র থেকে ধরা প্রায় ৪০০ টন মাছ বিক্রি হয় দিঘা মোহনার আড়তে। মাছ বিক্রি থেকে শুরু করে কর্মীদের বেতন মিলিয়ে প্রায় চার কোটি টাকার লেনদেন হত। এখন তা বন্ধ।’’ তিনি জানান, পূর্ব মেদিনীপুরের ৪২টি জায়গায় সামুদ্রিক মাছ শুকিয়ে কয়েক হাজার মানুষ দিন গুজরান করেন। তালাবন্দিদশা চলায় তাঁদেরও রোজগারের রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
তাজপুরের বাসিন্দা, মৎস্যজীবী শঙ্কর মাজি বলেন, ‘‘গত বর্ষার মরসুমে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল-সহ ঘনঘন দুর্যোগের দরুন আমরা সমুদ্রে যেতে পারিনি। তা ছাড়া ১৫ এপ্রিল থেকে দু’মাস সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া নিষিদ্ধ। ভেবেছিলাম, শেষ এক মাস ভাল ভাবে মাছ ধরব। কিন্তু লকডাউন আমাদের সব কিছুই শেষ করে দিল।’’
কী ভাবছে সরকার? রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের দাবি, সরকার ধীবরদের পাশে দাঁড়াচ্ছে।