কাকদ্বীপের ঘাটে এল ইলিশ। ছবি: দিলীপ নস্কর
মরসুমের প্রায় তিন মাস পরে ইলিশের খরা কিছুটা হলেও কাটল।
প্রথম দিকে মৎস্যজীবীরা প্রায় খালি হাতে ফিরেছিলেন। বহু টাকা খরচ করে মহাজনদের থেকে ঋণ নিয়ে ইলিশ ধরতে যান মৎস্যজীবীরা। সেখানে ভাল ইলিশ না উঠলে সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। গত কিছু মাস ধরে সমুদ্র থেকে ট্রলার ফিরতে শুরু করেছে। তাতে অন্য মাছ জালে ধরা পড়লেও, ধরা দেয়নি ইলিশ। তা নিয়ে চিন্তিত ছিল মৎস্যজীবীরা।
তবে এখন ইলিশের অভিমান ঘুচেছে। মৎস্যজীবীদের জালে ধরা পড়েছে ইলিশ। এক মৎস্যজীবীরা কথায়, ‘‘টন টন ইলিশ আছে এ বার ট্রলারে।’’ দিন কয়েক ধরেই ঘাটে ট্রলার ফিরতে শুরু করেছে।
মৎস্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৫ জুন থেকে ইলিশের মরসুম শুরু হয়েছে। তারপর থেকে সুন্দরবনের কাকদ্বীপ এলাকার বিভিন্ন ঘাট থেকে প্রায় ৫ হাজার ট্রলার ইলিশের খোঁজে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দেয়। প্রায় তিন মাস ধরে প্রতিনিয়ত ট্রলার সমুদ্রে গিয়ে সামান্য কিছু মাছ নিয়ে ফিরছিল। ভাল ও বেশি পরিমাণে ইলিশ উঠছে না দেখে কিছু ট্রলার সমুদ্রে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। মাসের মাঝামাঝি থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুরু হওয়ায় টানা প্রায় ১৫ দিন মাছ ধরা বন্ধও ছিল। ২৮ অগস্ট থেকে আবহাওয়া দফতরের সবুজ সঙ্কেত পেয়ে একে একে ট্রলার ফের গভীর সমুদ্রে যায়। এখন তারা ফিরতে শুরু করেছে।
এখন দিনে ১৫০-২০০ ট্রলার ফিরছে। এক এক দিন মাছ উঠছে ৪০-৪৫ টন। যা এ বছরের সেরা বলে মনে করছেন মৎস্যজীবীরা। তা ছাড়া, সমুদ্রে ভাল আবহাওয়া থাকার জন্য বেশ কয়েক দিন ধরে মাছ ধরতে পারছেন মৎস্যজীবীরা। এক থেকে দেড় কেজির ইলিশও ধরা পড়ছে বলে জানিয়েছেন মৎস্যজীবীরা।
ট্রলারে যাওয়া মৎস্যজীবী শৈলেন দাস, ধীরেন পাত্ররা জানান, গভীর সমুদ্রে এখন মাছ ধরার অনুকূল পরিবেশ। বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়ছে। জোগান কম হলেও বড় মাছ বেশি দামে বিক্রি হওয়ায় মালিকেরা কিছুটা লাভের মুখ দেখছেন।
কাকদ্বীপ ফিশারম্যান ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘‘এ বছরে জালে যে সাইজের মাছ ধরা পড়ছে, গত ৫-৭ বছরে তা ধরা পড়েনি। বড় মাছ হলে স্বভাবতই দামও বেশি হবে। তবে ইলিশপ্রিয় বাঙালি একটু বেশি দাম দিয়ে বড় ইলিশ খেলে স্বাদও বুঝতে পারবেন।’’ তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত মাছের আড়তে ৬০০-৭০০ গ্রাম ইলিশ ৬০০-৬৫০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ইলিশ ১০০০-১১০০ টাকা আর ১ কেজি বা তার থেকে বড় ইলিশ প্রায় বারো-তেরোশো টাকা কেজি দরে বিক্রি পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজন। খোলা বাজারে দাম সাইজ অনুযায়ী ৩০০-৭০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিজন।