ফিরহাদ হাকিম।
কলকাতার জল নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে রলরাকা পুরসভার যা পরিকল্পনা রয়েছে, সেই মোতাবেক চললে আগামী দু’-তিন বছরের মধ্যে জল জমার সমস্যা সমাধান হতে পারে। শনিবার সন্ধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনের লাইভ অনুষ্ঠান ‘অ-জানা কথা’য় এমনটাই জানালেন কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম ওরফে ববি হাকিম। পুরসভায় কী ভাবে কর্মসংস্থান বাড়ানো যায়, সে বিষয়েও কথা বললেন তিনি।
বিগত কয়েক বছরে শহরে কেন এত বেশি জল জমছে এবং তা নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা কী? সান্ধ্য-আড্ডায় এক দর্শক ববির কাছে এ বিষয়ে জানতে চান। এই প্রশ্নের জবাবে কলকাতার মেয়র বলেন, ‘‘আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এখন বৃষ্টির ধরন বদলে গিয়েছে। আগে ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি দু’-তিন দিন ধরে হত। এখন তিন-চার ঘন্টায় ওই পরিমাণ বৃষ্টি হয়ে যায়। ঘন্টায় ১৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হবে, এমন পরিমাণ ধরে নিয়ে কলকাতার জল নিকাশি ব্যবস্থার নকশা তৈরি হয়েছিল। এখন আমাদের ওই পুরনো ব্যবস্থা বদলাতে হচ্ছে। এটা এক-দু’দিনে সম্ভব নয়। এটার জন্য আমাদের লেগে থাকতে হবে।’’
ববি জানান, শহরের জায়গায় জায়গায় জল জমা বন্ধ করতে ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ করছে পুরসভা। বেহালা, খিদিরপুরের সমস্যার দিকে আরও বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা এ নিয়ে অনেক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছি। খালগুলোকে পরিষ্কার করা দরকার। এখন বহু খালের উপর বাড়িঘর তৈরি হয়ে গিয়েছে। আর যে সব জায়গায় পাইপের বহন ক্ষমতা কম, তা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। এ বর্ষায় যেটা হয়েছে আগামী বর্ষায় সেটা হবে না বলেই আমার ধারণা। আর কিছু পাইপ বদলে ফেলতে হবে। এই কাজ সম্পূর্ণ হতে আরও দু’-তিন বছর সময় লাগতে পারে। এটা করতে পারলে আমার মনে হয়, জল জমার সমস্যা আর থাকবে না।’’
অনুষ্ঠানে আরও এক দর্শক পুরসভার খালি পদ নিয়ে ববিকে প্রশ্ন করেন। উত্তরে মেয়র জানান, বর্তমানে পুরসভার কাজের ধরনে অনেক বদল এসেছে। যার ফলে আগে যে জায়গায় লোকের দরকার পড়ত, এখন মেশিন দিয়েই সেই কাজ হয়ে যায়। তাঁর কথায়, ‘‘আগের লোক ডেকে এনে ড্রেন পরিষ্কার করা হত। এখন সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে মেশিন দিয়ে তা পরিষ্কার করা হয়। এখন ব্যাটারি গাড়ি বাড়ি বাড়ি গিয়ে বর্জ্য সংগ্রহ করে। এই সব কাজে আগে যে ম্যানপাওয়ার দরকার পড়ত, এখন তা আর পড়ে না। আগে স্টেনোগ্রাফার বা টাইপিস্ট দরকার পড়ত, এখন তো তা-ও লাগে না।’’
এরই সঙ্গে ববি জানান, ‘‘এখন পরিবেশ দূষণের বিষয়টি মাথায় রেখে কর্পোরেশনে টেকনিকাল পোস্টে জন্য লোক দরকার। কোন দফতরে অতিরিক্ত লোক কাজ করেন, আর কোন দফতরে টেকনিক্যাল পোস্টে লোক দরকার, তা এইচআর-কে জানাতে বলেছি। এর পর একটি তালিকা তৈরি করেই আমরা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব। এর জন্য আরও এক-দু’বছর সময় লাগবে।’’
পরিবেশ দূষণ মোকাবিলায় কলকাতায় শীঘ্রই পুরোদমে ইলেকট্রিক বাস চালানো শুরু হতে পারে বলেই ইঙ্গিত দিলেন মেয়র। তিনি জানান, এখন ৬০টি ইলেকট্রিক বাস ট্রায়ালে চলছে শহরে। আগামী বছর দুয়েকের মধ্যে আরও দু’হাজার ইলেকট্রিক বাস শহরে নামানো হবে বলেই জানালেন তিনি। তবে মেয়র জানালেন, ডাবল ডেকার বাস নিয়ে এখনই পুরসভার কোনও পরিকল্পনা নেই।