অনুব্রতকে কটাক্ষ ফিরহাদের। ফাইল চিত্র।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী লাল বাতি লাগানো গাড়ি চড়েন না। কোনও মন্ত্রীর গাড়িতেও লাল বাতি নেই। কিন্তু গাড়ির মাথায় লাল বাতি লাগিয়েই বীরভূমের নানা প্রান্ত চষে বেড়ান অনুব্রত মণ্ডল। এমনকি, সিবিআইয়ের তলব পেয়ে কলকাতাতেও তিনি লাল বাতির গাড়ি নিয়েই এসেছেন। তা নিয়ে বিতর্কও হয়েছিল যথেষ্ট। এ বার অনুব্রতের সেই লাল বাতির ব্যবহার নিয়েই কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি করেছেন তরুণজ্যোতি তিওয়ারি নামে বিজেপির এক আইনজীবী-নেতা। আদালতের খবর, শীঘ্রই মামলাটির শুনানি হতে পারে।
একটি সাদা, অন্যটি কালো। এই দুই রঙের দু’টি গাড়িই রয়েছে অনুব্রতের। দু’টির মাথাতেই শোভা পায় লাল রঙের আলো। আলো জ্বেলে জেলায় দাপিয়ে বেড়ালেও পুলিশ-প্রশাসনের কোনও কর্তাই অনুব্রত তথা কেষ্টর গাড়িতে লাল বাতি নিয়ে টুঁ শব্দটি করেননি। তবে কলকাতায় তাঁর লাল বাতি দেখে প্রশ্ন তুলেছিল সিবিআই। প্রতিক্রিয়া হয়েছিল নানা মহলেও। শুক্রবার হাই কোর্টে মামলা হওয়ার পরে অবশ্য বাতির ‘অপব্যবহার’ নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
অনুব্রত যে লালবাতি ব্যবহার করতে পারেন না, সে কথা জানিয়ে ফিরহাদ বলেন, “যদি তিনি লাল বাতি ব্যবহার করে থাকেন, তা হলে অবিলম্বে তা খুলে দিতে হবে।” মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, “নীল বাতি বা লাল বাতি নিয়ে কেউ গাড়ি ব্যবহার করলে গাড়ি আটক করা হবে।”
রাজ্যে কারা লাল বাতি কিংবা নীল বাতি ব্যবহার করতে পারবেন তার সরকারি তালিকা রয়েছে। সেই তালিকায় কোনও ভাবেই বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি পড়েন না। একটি সূত্রে বলা হয়েছে, তিনি দু’টি সরকারি নিগমের মাথায় রয়েছেন। যদিও কোনও সরকারি নিগমের মাথায় বসলেও লাল বাতি ব্যবহারের ছাড়পত্র মেলে না বলেই সরকারি সূত্রের দাবি।
এ দিন ফিরহাদ জানান, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই একটা নির্দেশিকা দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও গাড়ির মাথায় বাতির অপব্যবহার হচ্ছে। তাই সেই বিজ্ঞপ্তি ফের প্রকাশ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
ফিরহাদের এই মন্তব্যে অবশ্য কেউ কেউ রাজনীতির গন্ধও খুঁজে পেয়েছেন। ঘটনাচক্রে, এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই অনুব্রতকে যে দিন সিবিআই তলব করেছিল, সে দিন তলবের ব্যাপারে কার্যত ‘নাক না গলাতে’ দেখা গিয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্বকে। রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেছিলেন যে বিষয়টি সিবিআই এবং অনুব্রতের। তাই তাঁরা কিছু বলবেন না। তা হলে রামপুরহাট পরবর্তী সময়ে অনুব্রতের থেকে তাঁর দল নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। এ ব্যাপারে অনুব্রতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর দেননি।