বাজির গুদামে সাত ঘণ্টা পরেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। নিজস্ব চিত্র।
মালদহে বাজির গুদামে বিস্ফোরণের ঘটনায় আগুন কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। সাত ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও জ্বলছে গুদাম এবং তৎসংলগ্ন বাজার এলাকা। এলাকার একাধিক দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। যা নেভাতে হিমশিম খাচ্ছে দমকলবাহিনী।
মঙ্গলবার সকাল ৬.৪৫ মিনিট নাগাদ মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার নেতাজি পুরবাজার এলাকায় বাজির গুদামের সামনে হঠাৎ বিস্ফোরণ হয়। সেখান থেকে গোটা গুদামে আগুন লেগে যায়। অগ্নিদগ্ধ হয়ে দু’জন বাজি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আহত আরও তিন জন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁরা মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মৃতেরা হলেন মঙ্গল ঋষি (৪৫) এবং গণেশ কর্মকার (৪০)।
বাজির গুদামে আগুন লাগার খবর পেয়ে সেখানে প্রথমে পাঁচটি ইঞ্জিন পাঠিয়েছিল দমকল। পরে ইঞ্জিনের সংখ্যা বাড়ানো হয়। উত্তর দিনাজপুর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর থেকেও আনা হয় ইঞ্জিন। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে দমকলকে।
দমকল সূত্রে খবর, যে হেতু ঘটনাস্থলে কার্বাইড রয়েছে, তাই আগুন নেভাতে সমস্যা হচ্ছে। কার্বাইড সহজে জল দিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনা যায় না। বালি চাপা দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে দমকল। গুদামটি একটি ছোট গলির ভিতরে। সেখানে দমকলের বড় ইঞ্জিন ঢুকতেই পারেনি। ছোট ইঞ্জিনের মাধ্যমে কোনও রকমে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মীরা।
ওই এলাকায় বেশ খানিকটা বৃষ্টিও হয়েছে বলে খবর। কিন্তু গুদামের উপরে শেড থাকায় বৃষ্টির জল আগুনে প্রভাব ফেলতে পারেনি। কার্বাইডের ধোঁয়া এবং বৃষ্টিতে দমকলের কাজ আরও কঠিন হচ্ছে। তা ছাড়া, যে দমকলকর্মীরা এলাকায় কাজ করছেন, কার্বাইডের অগ্নিকাণ্ডে তাঁরা বিশেষ পারদর্শী নন। তাঁদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ নেই। সমস্যা হচ্ছে সেই কারণেও।
নেতাজি পুরবাজার মালদহ শহর এলাকার একমাত্র পাইকারি বাজার। গনি খান চৌধুরীর আমলে এই বাজার স্থাপিত হয়েছিল। ছোট-বড় নানা দোকান এই বাজারে রয়েছে। বাজির আগুনে যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় বিস্ফোরণ হতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
গত ১৬ মে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল গ্রামের বাজি কারখানায় অনুরূপ বিস্ফোরণ ঘটেছিল। মৃত্যু হয়েছিল অন্তত ৯ জনের। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই পাঁচ দিনের মাথায়, ২১ মে কলকাতার অদূরে বজবজের একটি বাড়িতে বাজি বিস্ফোরণ হয়। সোমবার বীরভূমের দুবরাজপুরেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। বাড়িতে মজুত রাখা বোমা থেকে বিস্ফোরণ হয়। সেই আবহে মালদহের ঘটনা আলাদা মাত্রা জুড়েছে।