মালদহে বাজির গুদামে বিস্ফোরণ, মৃত্যু দু’জনের। প্রতীকী চিত্র।
মালদহে বাজির গুদামে আগুন। বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায় গুদামে। ঘটনাস্থলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। অন্তত তিন জন গুরুতর জখম হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে সেখানে আরও এক জনের মৃত্যু হয়। দমকলের আটটি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে। সম্প্রতি এগরা এবং বজবজের পর মালদহের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার নেতাজি পুরবাজার এলাকায় মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৪৫ মিনিট নাগাদ বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের শব্দ শুনে স্থানীয়েরা প্রথমে ভেবেছিলেন, কোথাও বোমা ফেটেছে। কিন্তু পরে জানা যায়, বাজারে যে বাজির গুদাম রয়েছে, সেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই বাজির গুদাম ঘিরে একাধিক বাজির দোকানও ছিল। মঙ্গলবার সকালে গুদামের সামনে গাড়ি থেকে কার্বাইড নামানো হচ্ছিল। সেই কার্বাইড অসাবধানতায় নীচে পড়ে যায়। তার পরেই হয় বিস্ফোরণ।
বিস্ফোরণের ফলে গুদামে আগুন ধরে যায়। দাহ্য পদার্থ মজুত থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে দুই বাজি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন দু’জন। মৃতদের মধ্যে এক জনের পরিচয় জানা গিয়েছে। তাঁর নাম মঙ্গল ঋষি। তিনি ইংরেজবাজারের বাগবাড়ির বাসিন্দা।
এই প্রতিবেদন শেষ বার আপডেট করার সময়ও (দুপুর ২টো) ইংরেজবাজারের গুদামে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। আগুন আরও ছড়িয়ে গিয়েছে বলে খবর। উত্তর দিনাজপুর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে আরও দু’টি ইঞ্জিন আনানো হয়েছে। দমকল সূত্রে জানানো হয়েছে, যে হেতু ঘটনাস্থলে কার্বাইড রয়েছে, তাই আগুন নেভাতে সমস্যা হচ্ছে। কার্বাইড সহজে জল দিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনা যায় না। বালি চাপা দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে দমকল।
নেতাজি পুরবাজার মালদহ শহর এলাকার একমাত্র পাইকারি বাজার। গনি খান চৌধুরীর আমলে এই বাজার স্থাপিত হয়েছিল। ছোট-বড় নানা দোকান এই বাজারে রয়েছে। বাজির দোকানে আগুন লাগায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কারণ, প্রচুর পরিমাণে বাজি মজুত ছিল ওই গুদামে। যে কোনও মুহূর্তে আরও বড় বিপদ হতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের। আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত তাঁরা নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না।
গত ১৬ মে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল গ্রামের বাজি কারখানায় অনুরূপ বিস্ফোরণ ঘটেছিল। মৃত্যু হয়েছিল অন্তত ৯ জনের। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই পাঁচ দিনের মাথায়, ২১ মে কলকাতার অদূরে বজবজের একটি বাড়িতে বাজি বিস্ফোরণ হয়। সোমবার বীরভূমের দুবরাজপুরেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। বাড়িতে মজুত রাখা বোমা থেকে বিস্ফোরণ হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাড়িটি। তবে কারও মৃত্যু হয়নি।